জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় দশানী নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দুইশত বছরের পুরনো কুশলনগর দক্ষিণপাড়া গ্রাম। তীব্র ভাঙনে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার বসতবাড়ি হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়েছে। নদীর পেটে চলে যাচ্ছে অনেক আবাদি-অনাবাদি জমি। এ পর্যন্ত গ্রামটির প্রায় দুই কিলোমিটার জমি বিলীন হয়ে গেছে।
উপজেলার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের প্রাচীনতম গ্রাম কুশলনগর দক্ষিণপাড়া। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে দশানী নদী। গ্রামটিতে প্রায় ৮-১০ হাজার লোকের বাস। গত কয়েক বছরের নদী ভাঙনে গ্রামটি এখন বিলীনের পথে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, শিগগিরই কুশলনগর গ্রাম পরিদর্শন করবো। এছাড়া নদী ভাঙন রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকাবাসী জানায়, দশানী নদীর তীব্র ভাঙনে কিছু কিছু এলাকার সবকিছু নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। গ্রামের বেশিরভাগ এলাকা বর্তমানে বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ শত শত ঘরবাড়ি এখন নদীর পেটে। ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে অনেক আবাদি-অনাবাদি জমি। ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার। ভাঙনের কারণে পাল্টে যাচ্ছে কুশলনগর গ্রামের মানচিত্র। এত কিছুর পরও নদী ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কুশলনগর গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল হক, সুজা মিয়া, আমজাদ হোসেন ও নাজিম উদ্দিন বলেন, গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে দশানী নদী চলে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় বইছে প্রবল স্রোত। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন চলছে। ফসলি জমির মাটি ভেঙে নদীতে পড়ছে। বিভিন্ন স্থানে ফলের বাগান ও গাছপালা ভেঙে পড়ছে। এখন পর্যন্ত গ্রামের চার ভাগের এক ভাগ এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই বসতঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। গত কয়েক দিনে প্রায় ২০টি বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গ্রামের শত শত ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে কাছে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তার বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে পাউবো কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুন মুন জাহান লিজা সরেজমিন পরির্দশন করেছেন। আশা করি তিনি নদী ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ইউএনও মুন মুন জাহান লিজা জানান, কুশলনগর গ্রামের নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক নদী ভাঙন সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। খুব শিগগিরই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।