শেরপুরের খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে (মুর্শিদপুর পীর) হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যুর জেরে আবারও হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকায় দরবারে হামলা করে ‘বিক্ষুব্ধ জনতা’। হামলার আগে দরবারের খাদেম ও অনুসারীরা সেখান থেকে চলে যান।
এর আগে মঙ্গলবার ভোরে মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৩ জন আহত হন। তাদের মধ্যে মো. হাফেজ উদ্দিন (৪০) নামের এক কাঠমিস্ত্রি বুধবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হাফেজ উদ্দিন লছমনপুর ইউনিয়নের কান্দাশেরীরচর গ্রামের মো. ইদু মিয়ার ছেলে। বাদ জোহর উপজেলার জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজমাঠে জানাজা শেষে কান্দাশেরীরচর গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা ও সংঘর্ষে হাফেজ উদ্দিনের মারা যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর ধারাবাহিকতায় হাফেজ উদ্দিনের জানাজা শেষে দুপুরে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা, দেশি অস্ত্র নিয়ে লছমনপুর এলাকায় দরবার শরিফে গিয়ে হামলা করে। তারা দরবারের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেওয়ার পাশাপাশি মূল্যবান আসবাব, গবাদিপশু, কাঠ, টিন, ধান-চালসহ নগদ টাকা লুটপাট করা হয়। হামলার সময় বিক্ষুব্ধ লোকজনের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অসহায় হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রথমে জনতাকে বাধা দিলেও বিকল্প পথে তারা দরবারে ঢুকে পড়ে। তবে হামলার আগে সব খাদেম ও মুরিদ দরবার ত্যাগ করায় কেউ আহত হননি।
দরবারের অন্যতম খাদেম মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে আমাদের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় আমরা অন্যত্র আছি।’
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি আমরা। হতাহতের ঘটনা এড়াতে কয়েক হাজার মানুষের ওপর কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এসব ঘটনার ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঠমিস্ত্রি হাফেজ উদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’