সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়িতে এক দর্শনার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে বিক্ষুব্ধ জনতা মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে কাছারিবাড়ির অডিটোরিয়াম ভাঙচুর করে। এ সময় কাছারিবাড়ির পরিচালক সিরাজুল ইসলামকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী জানান, দর্শনার্থীকে মারধর এবং বিক্ষুব্ধ জনতার ভাঙচুর উভয় ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঈদের পরদিন বিকালে শাহনেওয়াজ নামের এক দর্শনার্থী স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি ঘুরতে আসেন। তিনি প্রবেশমূল্য নিয়ে টিকিট নেন। কিন্তু মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়া হলেও তাকে কোনো টোকেন দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
শাহনেওয়াজ কাছারিবাড়ি পরিদর্শন শেষে বের হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের টোকেন দেখতে চান মেইন গেটে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী। টিকিট দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহনেওয়াজের সঙ্গে ওই কর্মচারীর কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে কাস্টোডিয়ানসহ কাছারিবাড়ির অন্যান্য কর্মচারীরা মিলে শাহনেওয়াজকে ধরে নিয়ে গিয়ে অফিসের মধ্যে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
খবর পেয়ে শাহনেওয়াজের অভিভাবক এবং স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় শাহনেওয়াজ ওই দিন রাতেই শাহজাদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
দুই দিন পরও ওই ঘটনায় পুলিশ কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি করা হয়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা কাছারিবাড়ি গিয়ে অডিটোরিয়ামে হামলা চালায়। এ সময় সেখানকার দরজা, জানালা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমান।
এ প্রসঙ্গে শাহনেওয়াজের ভাই সুমন আহম্মেদ অভিযোগ করেন, প্রবাসী শাহনেওয়াজ ছুটিতে দেশে এসে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল কাছারিবাড়িতে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই কাস্টোডিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দর্শনার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে আসছেন। প্রতিদিনই কোনও না কোনও দর্শনার্থী তাদের হাতে নির্যাতিত হয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শাহজাদপুর কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান ঈদের পরদিনের ঘটনাটিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেন। তবে ভাঙচুরের ঘটনা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।