কুড়িগ্রামে চিকিৎসক সংকট নিয়ে শুরু হলো বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ভার্চুয়ালি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুধুমাত্র জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতালে এই কার্যক্রম চলছে। এই চিকিৎসা কার্যক্রমে সেবা নিতে রোগীদের ৩০০ টাকা ফি দিতে হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ২৫০ শয্যার হলেও এখানে জনবল রয়েছে ১০০ শয্যার। হাসপাতালে সিনিয়র কনসালট্যান্টের পদ থাকলেও কোনও চিকিৎসক নেই। তবে জুনিয়র কনসালট্যান্ট আছেন। ফলে ৩০০ টাকা ফি দিয়ে বৈকালিক চিকিৎসা পাবেন রোগীরা।
উদ্বোধনের পর বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে রোগী দেখেন জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাইনুদ্দিন আহমেদ। প্রথমদিন ১০ জনের বেশি রোগী নির্ধারিত ফি দিয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন।
বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে মা খুকি বালাকে নিয়ে এসেছিলেন মালতি রাণী। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের মতো স্বল্পআয়ের মানুষদের জন্য অনেক ভালো উদ্যোগ। অল্প খরচে, কম সময়ের মধ্যে ডাক্তার দেখাতে পারলাম। এই সেবা চালু থাকলে আমাদের উপকার হবে।’
এই সেবা কার্যক্রমকে যুগান্তকারী হিসেবে দেখছেন বৈকালিক চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে থাকা জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাইনুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এটি সারা বিশ্বে চালু আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে আমাদের দেশেও প্রাতিষ্ঠানিক প্রাইভেট চিকিৎসাসেবা চালু হলো। আশা করছি, এটি আমাদের চিকিৎসাসেবাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য বিভাগের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. এবিএম আবু হানিফ, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহীদুল্লাহ লিংকন, সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর এ মুর্শেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিনহাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমীন ও জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীনুর রহমান সরদারসহ চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক এবিএম আবু হানিফ উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্সসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এই কার্যক্রম সফল করার দিক-নির্দেশনা দেন।
বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের সূচি
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে একটি সেবা সূচি চালু করেছে। তবে চাহিদা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি পরিবর্তন হতে পারে।
মেডিসিন বিভাগ
সোমবার ও মঙ্গলবার, হৃদরোগ বিভাগ: রবিবার ও বুধবার, গাইনি অবস বিভাগ: সোমবার ও রবিবার, সার্জারি বিভাগ: সোমবার ও মঙ্গলবার, অর্থোসার্জারি বিভাগ: শনিবার ও বৃহস্পতিবার এবং রবিবার ও সোমবার শিশু বিভাগ বৈকালিক চিকিৎসাসেবা দেবে।
নির্ধারিত চিকিৎসক কর্তৃক নির্ধারিত ফি’র বিনিময়ে এই সেবা চালু করা হয়েছে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া নির্ধারিত দিনে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে এই সেবা কার্যক্রম চলবে। দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু থাকবে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীনুর রহমান সরদার বলেন, ‘বৈকালিক এই চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমে রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ খোলা থাকবে। তবে রোগীদের ওষুধ নিতে হবে বাইরের ফার্মেসি থেকে।’