কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলায় আরও ২০০-২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ম আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। বিচারক তার আদেশে বলেন, এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার পাশাপাশি মামলাটি যেন দ্রুত বিচার আইনেও নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ, সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, সিলেট ইনঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিছবাউল করিম রফিকসহ ৫৫ জন। পাশাপাশি মামলায় অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়। মামলা করেছেন অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী।
আরও পড়ুন: সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা, কেন্দ্রের তদন্ত কমিটি
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ও মামলার বাদী প্রবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মামলার আসামিরা সিলেটে চিনি চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। একইসঙ্গে তারা অছাত্র দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করায় আমি ফেসবুকে পোস্ট করি। এরই কারণে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় আসামিরা গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করলে বিচারক থানা পুলিশকে এজাহার গ্রহণ করে দ্রুত বিচার আইনে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামকে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি। তবে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ বলেন, ‘ওই ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’
সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। আদালতের নির্দেশ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার অভিযোগ
এদিকে, প্রবাল চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখতে গত শুক্রবার (১১ আগস্ট) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তদন্ত কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-দফতর সম্পাদক সানি মোহাম্মদ আকাশ। কমিটিকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগের দফতর সেলে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সিলেটের দাঁড়িয়াপাড়া এলাকায় প্রবাল চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা গুলি ছোড়ার পাশপাশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে পায়ে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে আহত হন প্রবাল চৌধুরী।