X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

প্রয়াত হলেন ভারতের ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাসী’ খ্যাত রাজশাহীর সন্তান এ কে রায়

দিল্লি প্রতিনিধি
২২ জুলাই ২০১৯, ১৯:০৯আপডেট : ২২ জুলাই ২০১৯, ১৯:১২
image

ভারতের বর্ষীয়ান ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় বামপন্থী নেতা অরুণ কুমার রায় গতকাল (রবিবার) রাতে ধানবাদের একটি হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন। তার জন্মস্থান বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা। ভারতের রাজনীতিতে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘এ কে রায়’ নামে। অকৃতদার এই রাজনীতিকের ব্যাঙ্ক ব্যালান্স আমৃত্যু ছিল ‘শূন্য’। ভারতবাসীর কাছে তিনি একজন রাজনৈতিক সন্ন্যাসী (‘পলিটিক্যাল সেইন্ট’)।

এ কে রায়

এ কে রায়ের জন্ম ১৯৩০ সালে রাজশাহী জেলার সপুরায়। তার বাবা শিবেন্দ্র চন্দ্র রায় ছিলেন রাজশাহীর নামী আইনজীবী। বাঙালি হয়েও এ কে রায় সারা জীবন মূলত বিহার ও ঝাড়খণ্ডেই রাজনীতি করেছেন। খাঁটি বাংলাভাষী কোনও রাজনীতিবিদ ভারতের হিন্দি বলয়ের রাজনীতিতে এতটা সাফল্য পেয়েছেন, এমন নজির প্রায় নেই বললেই চলে। বিশেষত আদিবাসী সমাজে তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশস্পর্শী।  তিনবার আইনপ্রণেতা হওয়া সত্ত্বেও নিজের কোনও বাড়িঘর পর্যন্ত ছিল না এ কে রায়ের, জীবনের শেষ কয়েকটা বছর একজন পার্টি সদস্যের বাড়ির একটা ঘরেই কাটিয়ে দিয়েছেন। 
বিহারের ধানবাদ  আসন থেকে তিন-তিনবার জিতে (১৯৭৭, ১৯৮০, ১৯৮৯) আইনপ্রণেতা হিসেবে তিনি লোকসভায় গেছেন। এর আগে আরও তিনবার (১৯৬৭, ১৯৬৯ ও ১৯৭২) সিন্দ্রি আসন থেকে জিতে এমএলএ হিসেবে তিনি অবিভক্ত বিহার বিধানসভারও সদস্য হয়েছেন।

১৯৮৯ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের বেতন-ভাতা বিপুল বাড়ানোর জন্য যখন বিল আনা হয়, তখন দেশের কয়েকশো এমপি-র মধ্যে একমাত্র এ কে রায় ওই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। তার ঘনিষ্ঠ অনুগামী আনন্দ মাহাতোর কথায়, ‘এমপি-রা নিজেরাই নিজেদের বেতন বাড়িয়ে নেবেন, এই প্রস্তাব তিনি কিছুতেই মানতে পারেননি।  ওই ভূমিকার জন্য সারা দেশ তাকে তখন চিনেছিল।’

বিহার তথা ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে তিনি অবশ্য বহুদিন ধরেই ছিলেন একজন  জীবন্ত কিংবদন্তী।

কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে রসায়নে মাস্টার্স করে তিনি চাকরি করতে গিয়েছিলেন তখনকার বিহারের সিন্দ্রিতে, সরকারি সংস্থা পিডিআইএল-এ। কিন্তু সরকার বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে তাকে সেই চাকরি খোয়াতে হয়। তার পরেই এ কে রায় শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ধানবাদ অঞ্চলের কয়লাখনি শ্রমিকদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়।

প্রথম জীবনে সিপিআইএম দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে তিনি নিজস্ব বামপন্থী দল এমসিসি (মার্ক্সিস্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটি) গঠন করেন। এ কে রায়ের রাজনৈতিক জীবনের আর একটি স্মরণীয় মাইলফলক হল, পৃথক ঝাড়খণ্ড রাজ্যের জন্য আন্দোলন।

বিহার ভেঙে আদিবাসী-প্রধান ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠনের জন্য তিনি আদিবাসী নেতা শিবু সোরেন ও বিনোদ বিহারী মাহাতোর সঙ্গে মিলে ১৯৭১ সালে তীব্র আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। সেই আন্দোলন চূড়ান্ত সফলতা পায় প্রায় তিন দশক পরে, যখন ২০০০ সালের ১৫ নভেম্বর আলাদা রাজ্য হিসেবে ঝাড়খণ্ডের জন্ম হয়।

 

/বিএ/
সম্পর্কিত
চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ওয়াশিংটনে কোয়াড বৈঠক, প্রশ্নের মুখে ঐক্য
তেলেঙ্গানায় ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩৬
বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লিতে সংসদীয় প্যানেলের বৈঠকে যা আলোচনা হলো
সর্বশেষ খবর
সালমান-আনিসুলসহ নতুন মামলায় গ্রেফতার ৫
সালমান-আনিসুলসহ নতুন মামলায় গ্রেফতার ৫
পুলিশের হামলার প্রতিবাদে পটিয়া থানার সামনে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি
পুলিশের হামলার প্রতিবাদে পটিয়া থানার সামনে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি
প্রথম রাউন্ডে জোকোভিচকে রক্ষা করেছে ‘অলৌকিক ওষুধ’!
প্রথম রাউন্ডে জোকোভিচকে রক্ষা করেছে ‘অলৌকিক ওষুধ’!
আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানো: ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানো: ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
সর্বাধিক পঠিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
অবশেষে রিজার্ভে আইএমএফের লক্ষ্য পূরণ হলো
অবশেষে রিজার্ভে আইএমএফের লক্ষ্য পূরণ হলো
ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
ক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!
ঢাকা সিটি কলেজক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!