রুশ সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিমা উপকরণ চোরাচালানের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে চীন। এগুলো ব্যবহার করে মস্কোর সামরিক ড্রোন তৈরির অন্যতম সহায়ক হয়েছে বেইজিং। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এস্তোনিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ সামরিক বাহিনীর প্রায় ৮০ শতাংশ উপকরণ চীন থেকে এসেছে। এর আগে ইউক্রেনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে উদ্ধারকৃত রুশ সামরিক সরঞ্জাম যাচাই করে তারা নিশ্চিত হয়েছে যে, অন্তত ৬০ শতাংশ উপকরণ চীন পাঠিয়েছে।
এস্তোনিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার জন্য উচ্চ প্রযুক্তি এবং দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য উপকরণ আমদানির প্রাথমিক কেন্দ্র হচ্ছে চীন। তারা কৌশলে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ক্রেমলিনকে সহায়তা করছে।
এক ভিডিও কলে গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক কাউপো রোসিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া হেরে গেলে তা হবে চীনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের জয়।
এজন্যই মস্কোর পরাজয় ঠেকানোতেই বেইজিংয়ের প্রধান স্বার্থ নিহিত।
এস্তোনিয়ার রাজধানী শহর তালিনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে রয়টার্স।
মস্কোকে নিজেদের নিরাপত্তার অন্যতম ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করে থাকে তালিন। তাই পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো সদস্য এস্তোনিয়া রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে থাকে। বিশেষত ২০২২ এ ইউক্রেনে পূর্ণ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে তাদের সতর্কতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাল্টিক প্রতিবেশী লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ার মতো এস্তোনিয়াকেও বলপূর্বক দখল করেছিল মস্কো। ১৯৯১ সালে সোভিয়েতের পতনের পরই কেবল তারা নিজেদের সার্বভৌমত্ব ফেরত পায়।
এস্তোনিয়ার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার কাছে ড্রোন যন্ত্রাংশের নিজস্ব বিকল্প নেই। তাই এগুলো প্রধানত পশ্চিমা দেশ থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। চীনা সরকার বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রাংশের গোপন লেনদেন ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সহজতর করছে।
এস্তোনিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, চীনে থাকা পশ্চিমা কোম্পানিগুলোও এই পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।