আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে ভেনেজুয়েলান অপরাধচক্রের অভিযুক্ত সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউজের নজিরবিহীন এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, প্রেসিডেন্টের কাজে বাঁধা দেওয়ার অধিকার বিচার বিভাগের নেই। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিয়াভিট বলেছেন, মার্কিন ভূখণ্ড থেকে বহিষ্কৃত বিদেশি সন্ত্রাসী বহনকারী উড়োজাহাজের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার কোনও অধিকার একজন বিচারকের নেই।
শনিবার সন্ধ্যায় বিচারক জেমস বোয়াসবার্গের এক আদেশের পরদিনই ভেনেজুয়েলান অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাহুয়ার দুই শতাধিক অভিযুক্ত সদস্যকে বের করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। বহিঃশত্রু আইনের আওতায় এই আদেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা মূলত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হয়। তবে, অন্য কোনও রাষ্ট্র কর্তৃক আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ সংঘটিত হলেই এই আইন কার্যকর হতে পারে দাবি করে ওই বহিষ্কারাদেশ ১৪ দিনের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক বোয়াসবার্গ।
উল্লেখ্য, চক্রটির বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজি ও চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
একজন প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতিতে বিচারবিভাগ চাইলেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না দাবি করে লিয়াভিট আরও বলেছেন, স্থগিতাদেশ দেওয়ার জন্য আদালতের কোনও আইনি এখতিয়ার নেই।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে মার্কিন সাংবিধানিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতার প্রতি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানালেন ট্রাম্প।
এই বিষয়ে ক্যাট ইনস্টিটিউটের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও নাগরিক অধিকার বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক এডিংটন বলেছেন, হোয়াইট হাউজ যেভাবেই পুরো বিষয়টা উপস্থাপনের চেষ্টা করুক না কেন, তারা যে বিচারকের আদেশ সরাসরি অগ্রাহ্য করেছে, এ ব্যাপারে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। মার্কিন সরকারের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য উপেক্ষা করার এমন নজির গৃহযুদ্ধের পর আর দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই ভেনেজুয়েলান অপরাধচক্রের সদস্যদের পিশাচ বা বিদেশি সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে। তবে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউ আসলেই ওই চক্রের সদস্য কিনা অথবা তাদের অপরাধের কোনও রেকর্ড আছে কিনা, তা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের এল সালভাদরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, সেখানকার টেরোরিজম কনফাইনমেন্ট সেন্টারে তাদের আটক রাখা হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পায়নি রয়টার্স। আর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনও বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।