ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া অঞ্চলে বিগত কয়েকদিনে ১৭ জনের বেশি মানুষকে হত্যার দাবি করেছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীরা এ কথা বলেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পাপুয়ান বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্র সেবি সামবম বলেছেন, গত ৬ এপ্রিল থেকে ১৭ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে তারা। কেবল বুধবারই পাঁচজনকে হত্যা করা হয়। তাদের দাবি, নিহতরা আসলে সেনা সদস্য ছিলেন, যারা স্বর্ণখনির শ্রমিকবেশে অভিযানে এসেছিলেন।
সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে সেবি বলেছেন, ইন্দোনেশিয়া সরকারের সেনাবাহিনী যদি আমাদের ধাওয়া করতেই চায়, তাদের কাছে আমার অনুরোধ, দেকাই শহরে আসুন। আমরা এখানেই আছি।
এদিকে, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফ্রেগা ওয়েনাস বলেছেন, ১১ জন খনি শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা সেনাসদস্য- বিদ্রোহীদের এই বক্তব্য অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, এগুলো ভুয়া খবর।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটিকে ভয়াবহতম হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন ফ্রেগা। এর আগে ২০১৮ সালে, পাহাড়ি এনদুগা এলাকায় ২১ জন সড়ক নির্মাণ শ্রমিককে হত্যা করেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি গোষ্ঠী।
পৃথক এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, সংঘাতের এলাকা থেকে ৩৫ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে দুইজনকে জিম্মি করে রেখেছে বিদ্রোহীরা।
১৯৬৯ সালে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইন্দোনেশিয়ার নিয়ন্ত্রণে আসে পাপুয়া অঞ্চল। তারপর থেকেই সম্পদে সমৃদ্ধ এই অঞ্চলে স্বাধীনতার দাবিতে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাত চলে আসছে।
দীর্ঘ একটা সময় সংঘাতের মাত্রা অল্প হলেও দিনে দিনে এর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদেশিদের জিম্মি করার মতো অপরাধও সংঘটিত করেছে তারা। এক নিউ জিল্যান্ডের বিমানচালক ১৯ মাস জিম্মি রাখার পর গত বছর মুক্তি দেওয়া হয়।
ইদানীং বিদ্রোহীদের অস্ত্রভান্ডারও সমৃদ্ধ হচ্ছে। কালোবাজার থেকে সংগ্রহ করে অথবা বিভিন্ন সেনাচৌকিতে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে নিজেদের আরও সশস্ত্র করে তুলছে তারা।