কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত। এই সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন সিনদুর বা সিঁদুর অভিযান। দিল্লির আগ্রাসনকে যুদ্ধ ঘোষণার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বলে হুঁশিয়ার করেছে ইসলামাবাদ।
ভারতের দাবি, তারা পাকিস্তানে অবস্থিত নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এইসব ঘাঁটি থেকে ভারতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা চলছিল বলে তারা অভিযোগ করেছে।
এদিকে, পাকিস্তানের দাবি, তাদের ছয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।
সিঁদুর হচ্ছে বিবাহিত সনাতনী নারীদের একরকম অনুষঙ্গ। লাল রঙের গুঁড়ো সিঁথিতে ব্যবহার করা হয়। কাশ্মীরের সন্ত্রাসী হামলায় একাধিক পুরুষকে হত্যা করায় অনেক নারী স্বামীহারা হয়েছেন। সম্ভবত এই ঘটনা এবং সনাতন দেবী কালীর শাস্তির প্রতি ইঙ্গিত করতে অভিযানের নাম সিঁদুর রাখা হয়েছে।
হামলার ক্ষয়ক্ষতি
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। ভারতের দিক থেকে এই দাবির পক্ষে বা বিপক্ষে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের চার সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনটি যুদ্ধবিমান রাতে বিভিন্ন স্থানে বিধ্বস্ত হয় এবং তিনজন পাইলটকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উভয় দেশের সেনাবাহিনী কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর তীব্র গোলাগুলি করেছে।
হতাহতের সংখ্যা
প্রাথমিকভাবে, ভারতের হামলায় আটজন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে বুধবার ভোরে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন বলে তাদের কাছে সর্বশেষ তথ্য এসেছে।
এদিকে ভারত দাবি করছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানি সেনাদের গোলাগুলি এবং শেল বর্ষণে অন্তত সাত জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
ছাড় পায়নি আকাশপথ
হামলার পর নিরাপত্তার আশঙ্কায় উত্তর ভারতের একাধিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। এদিকে, ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেট এয়ারলাইন্স তাদের বহু ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এয়ার ইন্ডিয়া তাদের দুটি ফ্লাইটের গতিপথ পরিবর্তন (ডাইভার্সন বা রি-রাউটিং) করেছে।
সাময়িকভাবে পাকিস্তানে ফ্লাইট স্থগিত করেছে কাতার এয়ারওয়েজ।
এদিকে, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স জানায়, আকাশে থাকা ফ্লাইটগুলো করাচিতে ঘুরিয়ে আনা হয়েছে এবং মাটিতে থাকা বিমানগুলোর যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছে।
সাধারণ জনগণের অবস্থা কী?
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সেখানকার হাসপাতাল ও নিরাপত্তা বাহিনীকে বাড়তি সতর্ক থাকতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে বিস্ফোরণের পর কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলের বহু স্কুল বুধবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স