গত একসপ্তাহ ধরে মাদকবিরোধী অভিযানে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে চীন। সিন্থেথিক ওপিওইড ফেন্টানিল নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রশাসনের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে অবশেষে নড়েচড়ে বসছে বেইজিং। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল পাচার ঠেকানোর জন্য বেইজিংকে দায়ী করে গত ফেব্রুয়ারিতে চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ওই মাদকের ওভারডোজে যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে চার লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গত মাসে দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্কে কিছুটা সমঝোতা শুরু হলেও, শুল্ক অনেকটাই বহাল থাকে।
নিজেদের মাদক নিয়ন্ত্রণ রেকর্ডের সাফাই গেয়ে বেইজিং বলে আসছে, মাদক নিয়ন্ত্রণে তাদের সমস্ত প্রচেষ্টার তথ্য রয়েছে। তাদের মতে, ফেন্টানিল ব্যবহার করে চীনকে কেবল ব্লাকমেইল করার চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র।
চীন শুরুতে মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করে বরং নিজেদের মাদকবিরোধী রেকর্ডের পক্ষে সাফাই দেয়। ওয়াশিংটনের দাবির মধ্যে ছিল—প্রচারণার জন্য কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলির প্রথম পাতায় অভিযান তুলে ধরা, পার্টি সদস্যদের সচেতন করা, এবং নির্দিষ্ট রাসায়নিকের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ।
গত বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রী ওয়াং শিয়াওহংয়ের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড পার্ডিউয়ের বৈঠকের পর কিছু অগ্রগতি হয়। বৈঠকে চীন মাদকের বিরুদ্ধে সহযোগিতায় আগ্রহ প্রকাশ করে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই পদক্ষেপগুলো জাতিসংঘের মাদকবিরোধী কনভেনশন অনুযায়ী স্বাধীনভাবে নেওয়া হয়েছে, যা চীনের বৈশ্বিক মাদক নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় অংশগ্রহণের মনোভাব প্রকাশ করে।
চীনের রাজস্ব বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত তারা ২ দশমিক ৪২ টন মাদক জব্দ করেছে এবং মাদকপাচারে জড়িত সন্দেহে ২৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ ছাড়া জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অর্থপাচারের অভিযোগে ১৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা এবং ৭০০ জনের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।