কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে আফগান সরকারের প্রতিনিধিরা। শনিবার শুরু হওয়া দুই দিনের এ শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন উভয় পক্ষের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা।
আলোচনা শুরুর একদিন আগে শুক্রবার দোহায় পৌঁছান আফগান সরকারের সাবেক প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ। বৈঠকে আফগান সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তালেবান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির রাজনৈতিক উপ-প্রধান মোল্লা বারাদার।
আফগান সরকারের প্রতিনিধি দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন ফরেদুন কাওয়াজুন। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, দোহায় তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নানা ইস্যুতে কথা বলবেন আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ।
ফরেদুন কাওয়াজুন বলেন, আফগান সংকটের সমাধান আলোচনার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়েই দেশে শান্তি ফিরতে পারে।
তালেবানের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম বলেন, তার দল বরাবরই আলোচনার জন্য প্রস্তুত। কেবল এর মাধ্যমেই বিদ্যমান সংকটের উত্তরণ ঘটানো সম্ভব। তবে তালেবানের পাশাপাশি সরকারকেও তার সদিচ্ছা দেখাতে হবে। সংকট উত্তরণে তাদেরও আন্তরিক দৃঢ়তা প্রদর্শন করা দরকার।
দোহা থেকে আল জাজিরার ওসামা বিন জাভাইদ বলেন, উভয় পক্ষই বলছে যে সংলাপই একমাত্র এগিয়ে যাওয়ার পথ। কেবল আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বললেও বাস্তবে তারা খুবই আলাদা ভাষায় কথা বলছে।
তিনি বলেন, আলোচনায় দৃশ্যত কোনও অগ্রগতি নেই। আফগান সরকার জোর দিয়ে বলছে যে সত্যিকারের কোনও সংলাপ হওয়ার আগে যুদ্ধবিরতি হওয়া দরকার। অন্যদিকে তালেবান শরিয়া আইনের ওপর জোর দিয়েছে। তারা এমন একটি সরকার চায় যেটি হবে বিস্তৃত এবং যেখানে আফগানিস্তানের সব পক্ষের অংশগ্রহণ থাকবে।
এমন সময়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বিদেশি বাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগের ডামাডোলে একের পর এলাকার দখল নিচ্ছে তালেবান। গত ৯ জুলাই দলটি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ৮৫ শতাংশ এলাকা এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। এরইমধ্যে পাকিস্তান, ইরান, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি বর্ডার ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। পুরো দেশেই একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে তারা। তালেবানের ভয়ে অনেক জায়গায় বিনা প্রতিরোধে মাঠ ছাড়ছে সেনা সদস্যরা। শুধু তাই নয়, অনেকে আবার এলাকা, এমনকি দেশ ছেড়েও পালিয়ে যাচ্ছে। গত ৫ জুলাই সোমবার একদিনেই পালিয়ে প্রতিবেশী তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে সহস্রাধিক আফগান সেনা। সূত্র: আল জাজিরা।