তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মা ইং-জিউ চলতি মাসে চীন সফর করবেন। রবিবার তার কার্যালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ১৯৪৯ সালে রিপাবলিক অব চায়না (চীন প্রজাতন্ত্র) সরকারের পরাজয়ের পর কোনও সাবেক বা বর্তমান তাইওয়ানি নেতার এটিই প্রথম চীন সফর। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এমন সময় এই সফর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন বেইজিং ও তাইপে’র মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। চীনের সার্বভৌমত্ব মেনে নেওয়ার জন্য তাইওয়ানের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের ওপর সামরিক ও রাজনৈতিক চাপ জোরদার করছে।
তাইওয়ানের বিরোধী দল কওমিনতাং (কেএমটি) দলের একজন সিনিয়র সদস্য। ২০১৫ সালের শেষ দিকে সিঙ্গাপুরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন। এর কিছু দিন পর তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সাবেক এই তাইওয়ানি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, ২৭ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল তিনি চীন সফর করবেন। সফরে তিনি নানজিং, ইউহান, চাংশা, চংকিং ও সাংহাই শহর ভ্রমণ করবেন।
তার কার্যালয় আরও বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং চীনের সঙ্গে জাপানের সংঘাতসহ ১৯১১ সালের বিপ্লবের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো পরিদর্শন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ১৯১১ সালের বিপ্লবের মাধ্যমে চীনের শেষ সম্রাটের পতন হয়েছিল এবং রিপাবলিক অব চায়না প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক নাম এখনও রিপাবলিক অব চায়না।
বিবৃতিতে সফরে তিনি কোনও চীনা কর্মকর্তা বা নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন কিনা তা বলা হয়নি।
কেএমটি সাধারণত চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে। কিন্তু বেইজিংপন্থী হওয়ার অভিযোগ তারা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে । চীন ও তাইওয়ান কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট ভ্রমণ বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বেইজিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছে কেএমটি।
গত মাসে দলটির উপ-চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রিউ হিসিয়া বেইজিং সফর করেন এবং চীনের সিনিয়র কমিউনিস্ট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) হিসিয়ার বেইজিং সফর নিয়ে কেএমটিকে আক্রমণ করেছে। তারা অভিযোগ তুলেছে, তারা বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ এবং তাইওয়ানকে বিক্রি করে দিতে চায়।
তবে কেএমটি বলে আসছে, বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে চীনের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বিচ্ছিন্নতাবাদী মনে করে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই-এর আলোচনার একাধিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। তাইওয়ানি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এবং চীনের সার্বভৌমত্ব প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেবল তাইওয়ানের জনগণ।