ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে এক রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে হত্যা করেছে একদল ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। আসাম রাজ্যের গোলাঘাট জেলার এক গ্রামে পশুহত্যার অভিযোগে বাঘটিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্যের বন বিভাগ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
আসামের প্রধান বন কর্মকর্তা গুণদীপ দাস টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, বাঘটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছে, গুলিতে নয়।
স্থানীয় এক ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাঘের মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে প্রায় এক হাজার লোক জড়ো হয়েছিল এবং অনেকেই চাপাতি দিয়ে বাঘটিকে আক্রমণ করে।
ঘটনার পর বন বিভাগ একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামের বিধায়ক মৃণাল শইকীয়া এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট দিয়ে ঘটনাটিকে ‘বেদনাদায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বাঘের মৃতদেহের একটি ভিডিও শেয়ার করেন যেখানে প্রাণীটির ত্বক, মুখমণ্ডল ও পা কাটা অবস্থায় দেখা যায়। যদিও ভিডিওটির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করেনি বিবিসি।
শইকীয়া লিখেছেন, এই পৃথিবী শুধু মানুষের জন্য নয়, প্রাণীদের জন্যও। যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় আরেক বন কর্মকর্তা সোনালি ঘোষ জানান, বাঘটির উৎস নিশ্চিত নয়। তবে এটি কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে মারা গেছে।
আসামের বন বিভাগের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সংরক্ষণমূলক বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে রাজ্যে বাঘের সংখ্যা ২০০৬ সালের ৭০ থেকে বেড়ে ২০১৯ সালে দাঁড়িয়েছে ১৯০-এ। তবে বনাঞ্চল সংকুচিত হওয়া ও জাতীয় উদ্যানগুলোর মধ্যে সংযোগহীনতার কারণে বাঘের সঙ্গে মানুষের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।
চলতি বছর এটিই আসামে বাঘ হত্যার তৃতীয় ঘটনা। ভারতের ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের অধীনে বাঘ একটি সংরক্ষিত প্রাণী। এই আইনে বাঘ শিকার, পাচার বা এর দেহাংশ ব্যবসা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।