ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে লক্ষ্য রাতভর প্রাণঘাতী ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চালিয়েছে রাশিয়া। এতে কমপক্ষে দুইজন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (৯ জুলাই) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, হামলায় ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ৪০০টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য ছিল কিয়েভ শহর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
কিয়েভ কর্তৃপক্ষ জানান, শহরের কেন্দ্রীয় শেভচেনকিভস্কি জেলায় একটি আবাসিক ভবনের ছাদে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়েছে এবং শহরজুড়ে আগুন লেগে গেছে।
তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই হামলায় আকাশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এবং বিস্ফোরণের শব্দ শহরজুড়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে রাতের আকাশে বিস্ফোরণ দেখা যায়। যদিও সেগুলোর সত্যতা এখনও বিবিসি যাচাই করতে পারেনি।
এই হামলা এমন এক সময়ে এলো যখন মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেন জানায়, তারা রাশিয়ার সবচেয়ে বড় আকাশ হামলার মুখোমুখি হয়েছে। ৭২৮টি ড্রোন এবং ১৩টি ক্রুজ বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেশের বিভিন্ন শহরে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনের পুলিশ জানায়, রাশিয়ার ড্রোন হামলা কিয়েভের আটটি জেলায় আঘাত হেনেছে।
কিয়েভ শহর প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো বলেন, ‘আবাসিক ভবন, যানবাহন, গুদাম, অফিস ও অন্যান্য অবসবাসযোগ্য ভবনেও আগুন লেগেছে।’
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগোর ক্লাইমেঙ্কো নিশ্চিত করেছেন, এই হামলায় ৬৮ বছর বয়সী এক নারী এবং একটি মেট্রো স্টেশনে কর্তব্যরত ২২ বছর বয়সী এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
কিয়েভের পোদিলস্কি জেলায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ‘প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস’ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ভিতালি ক্লিচকো।
নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, যতক্ষণ না বিমান হামলার সাইরেন বন্ধ হচ্ছে, ততক্ষণ নিরাপদ আশ্রয়ে লুকিয়ে থাকুন। বাসায় ফেরার পর জানালা বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে, কারণ শহরে ‘বেশি ধোঁয়া’ রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, রাতভর রাশিয়ার ড্রোন হামলার হুমকি দেশের আরও কয়েকটি অঞ্চলেও ছিল। তবে কিয়েভ ছাড়া অন্য কোথাও হতাহতের খবর এখনও স্পষ্ট নয়।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এই হামলার বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।