X
শনিবার, ১১ মে ২০২৪
২৮ বৈশাখ ১৪৩১
ডিএ দিলে রাজকোষে চাপ

অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার পথে পশ্চিমবঙ্গ

রক্তিম দাশ, কলকাতা
০৮ নভেম্বর ২০২২, ২০:৫৯আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ২০:৫৯

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা (ডিএ) দিতে গেলে রাজকোষে পড়বে ব্যাপক চাপ। উৎসব আর ঢালাওভাবে রাজ্যবাসীকে একাধিক প্রকল্পের আওতায় আনতে গিয়ে রাজকোষ শূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে রাজ্যের আয়ের থেকে ব্যয়ের অঙ্কটা পাহাড় প্রমাণ হয়ে পড়েছে গত কয়েক বছরে। এর মধ্যে ডিএ দিতে গেলে পশ্চিমবঙ্গ চলে যেতে পারে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার দিকে। আর তাই বকেয়া ডিএ দিতে টালবাহানা করছে রাজ্য সরকার। এমনটাই অভিযোগ করছেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো বিরোধীরা। এর থেকে পরিত্রাণের রাস্তা কী? তা নিয়ে মাথা ব্যথা বাড়ছে নবান্নর।

বিরোধীদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, রাজ্য সরকার ডিএ দিতে চাইছে না। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়াতে তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে সাফ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় হারে সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে গেলে রাজ্যের কোষাগারে ব্যাপক টান পড়বে। যার ফলে রাজ্যের আর্থিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ ডিএ দিতে হবে, তা দিতে গেলে রাজ্যের সব উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অর্থের অভাবে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না সেটা জানা কথা।’

একইভাবে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘সময় হলেই ডিএ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে যেসব প্রকল্প চলছে সেগুলোতে যেভাবে আর্থিক সাহায্য করতে হয়, সে জন্য হয়ত সামান্য একটু অসুবিধা হতে পারে।’

এরই মধ্যে আগামী বছর জানুয়ারি মাসে সরকার কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার দাবি, ‘১০ হাজার কোটি রুপি ঋণ চাইছে সরকার। ডিসেম্বরের বেতন যা জানুয়ারিতে হওয়ার কথা তা হবে না। নভেম্বর পর্যন্ত বেতন দেওয়ার ক্ষমতা এই সরকারের আছে।’

শুভেন্দু বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, একক বেঞ্চ, ডিভিশন বেঞ্চ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা আইন মেনেই নিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও সব দিক খতিয়ে দেখবে। রাজ্য সরকার শুধু সময় নষ্ট করছে। কারণ রাজ্য সরকার টাকা দিতে পারবে না। রাজ্য সরকার একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে।’

অভিযোগ উঠছে, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে ডিএ সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু তা না মেনে রাজ্য সরকার দান-খয়রাতি করে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। সরকারি টাকায় একাধিক উৎসব হচ্ছে, পুজোয় ক্লাবগুলোকে সরকারি অনুদান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।

ডিএ নিয়ে আদালতে মামলকারি শ্যামল মিত্র বলেন, ‘রাজ্য সরকার লক্ষ্মী ভাণ্ডার, সবুজ সাথীর মতো সামজিক খাতে বিনিয়োগ করবে এটা খুব ভালো। কিন্তু রাজ্য সরকার এই প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে কোনও আয়ের ঊর্ধ্বসীমা রাখছে না। স্বাভাবিক নিয়মেই যারা দারিদ্রসীমার নিচে থাকবে তাদের মূলস্রোতে আনা, সামাজিক ও আর্থিক উত্তোরণের জন্য সামাজিক প্রকল্পে ব্যয় হবে। তা নিয়ে বির্তক নেই। কিন্তু রাজ্য সরকার যেটা করছে, সবাইকে ঢালাও সব দিয়ে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য সাথীর ৫ লাখ রুপির বিমার সুযোগ একজন কোটিপতি কেন পাচ্ছেন?’

ঋণ টাকার জন্য যে পরিমাণ সুদ দিতে হয় রাজ্যের মোট আয় তা থেকে কম, এমনই অভিযোগ উঠছে। কেন্দ্রীয় সরকারে সাবেক উপদেষ্টা বিজেপি বিধায়ক অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ি বলেন, ‘এই অভিযোগ সত্যি হলে মারাত্বক অবস্থা। দেনার ফলে সুদ সাংঘাতিক অবস্থায়। রাজ্য সরকারের যে সুদ দিতে হয়, তা রাজস্ব আয় থেকে অনেক বেশি।’

বিজেপির বিধায়ক অম্বিকা রায় অভিযোগ করে বলেন, ‘হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের হলফনামায় স্পষ্ট রাজকোষ ফাঁকা হয়ে গেছে। ভাড়ে মা ভবানী অবস্থা তৃণমূল সরকারের। মিড মিলের টাকা লক্ষ্মী ভাণ্ডারে, রাস্তা নির্মাণের অর্থ বেতন দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। যাকে বলে ইধার কা মাল ওধার। উন্নয়নের নামে রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কঙ্কালসার চেহারাটা বেরিয়ে পড়ছে।’

 

/এএ/
সম্পর্কিত
দেহরক্ষীদের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি
ফিলিস্তিনি বন্দিদের নির্যাতনের কথা ফাঁস করলেন এক ইসরায়েলি
ইউক্রেনের খারকিভ দখলে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া
সর্বশেষ খবর
এক মোটরসাইকেলে ৩ ব্যবসায়ী, কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ গেলো দুজনের
এক মোটরসাইকেলে ৩ ব্যবসায়ী, কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ গেলো দুজনের
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই বছরই শেষ অ্যান্ডারসনের
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই বছরই শেষ অ্যান্ডারসনের
ফলন বেশি, চরাঞ্চলের কৃষকরা ঝুঁকছেন ‘জাপানি মিষ্টি আলু’ চাষে
ফলন বেশি, চরাঞ্চলের কৃষকরা ঝুঁকছেন ‘জাপানি মিষ্টি আলু’ চাষে
তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ কাদের মির্জার
উপজেলা নির্বাচনতার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ কাদের মির্জার
সর্বাধিক পঠিত
ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় জিডি নয়, মামলা নেওয়ার নির্দেশ
ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় জিডি নয়, মামলা নেওয়ার নির্দেশ
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
সরকারি গাড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার, তুলছেন ভ্রমণ বিলও
সরকারি গাড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার, তুলছেন ভ্রমণ বিলও
একই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হলেন তিন চেয়ারম্যান
একই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হলেন তিন চেয়ারম্যান
প্রশ্নফাঁস: বিমানের ডিজিএমসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র
প্রশ্নফাঁস: বিমানের ডিজিএমসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র