গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন নারী ও শিশু। বুধবার স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে। হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বিধ্বংসী সামরিক অভিযান এখন ২০তম মাসে প্রবেশ করার প্রাক্কালে নতুন করে সহিংসতা বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
আল-আকসা হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার রাতে গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি স্কুলে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই স্কুলে শতাধিক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলায় ২৭ জন নিহত হন, যার মধ্যে নারী ৯ জন ও শিশু ৩ জন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই স্কুলে এটি পঞ্চম হামলা।
এদিকে, গাজা সিটির আরেকটি স্কুলে ভোরে হামলা চালিয়ে ১৬ জনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে আল-আহলি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গাজার অন্যান্য স্থানের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে অন্তত ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের স্কুলে হামলার পর ধোঁয়ার বিশাল স্তম্ভ ও আগুনের লেলিহান শিখা দেখা গেছে। প্যারামেডিক ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত আক্রান্তদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলাগুলো সম্পর্কে তাৎণিক কোনও মন্তব্য করেনি। তবে তারা সব সময় দাবি করে আসছে, হামাস বেসামরিক স্থাপনা, এমনকি স্কুল থেকেও তাদের কার্যক্রম চালায় বলে বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর দায় হামাসের।
এই নতুন রক্তপাতের মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান তীব্র করার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় গাজার বিভিন্ন এলাকা দখল, বর্তমান দখলকৃত অঞ্চল ধরে রাখা, ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক গাজার দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া এবং বেসরকারি নিরাপত্তা কোম্পানিগুলোর সহায়তায় সহায়তা বণ্টনের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা রয়েছে।
ইসরায়েল এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কয়েক হাজার রিজার্ভ সেনা ডাকারও প্রস্তুতি নিয়েছে। দেশটির বক্তব্য, এই পরিকল্পনা ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে এবং এই মাসের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর করা হবে না।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে প্রাণ গেছে ৫২ হাজার ৫০০-র বেশি ফিলিস্তিনির।