বাহরাইনের সর্বোচ্চ শিয়া আলেম শেখ ইসা আল কাসিমের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে এ কথা জানা গেছে। সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে বাহরাইনের রাজনৈতিক সংকট আরও জটিল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান।
বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ আল কাসিম তার ধর্মীয় অবস্থানকে দেশের বিরুদ্ধে এবং বিদেশিদের স্বার্থে ব্যবহার করছেন। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন বলেও ওই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।
এই ঘটনার পর আল কাসিমের জন্মস্থান দিরাজে ব্যাপক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। তারা বাহরাইনের বাদশা হামাদ বিন ইসা আল-খলিফা এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।
‘আয়াতুল্লাহ’ শিয়া আলেমদের সর্বোচ্চ পদবি। শেখ কাসিম বাহরাইনের আয়াতুল্লাহ। নাগরিক ও রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে তার নেতৃত্বে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করেছে শিয়া সম্প্রদায়। উল্লেখ্য, বাহরাইন শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি আরব দেশ। যার শাসন ক্ষমতায় রয়েছে সুন্নি রাজতন্ত্র।
কয়েকদিন আগে প্রধান শিয়া বিরোধী দল ওয়েফাক ন্যাশনাল ইসলামিক সোসাইটি-কে দেশটির সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সংগঠনটির সব অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ প্রদান করা হয়। এর পরপরই সর্বোচ্চ শিয়া নেতার নাগরিকত্ব বাতিল করা হলো।
উল্লেখ্য, ওয়েফাক-এর রাজনৈতিক নেতা শেখ আলী সালমান ২০১৫ সাল থেকে জেলখানায় বন্দি রয়েছেন। সম্প্রতি তাকে রাজতন্ত্রের আদেশ অমান্য করার অপরাধে নয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সর্বোচ্চ শিয়া নেতার নাগরিকত্ব বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ইরান। ইরানের সংবাদমাধ্যম ফার্স নিউজ অ্যাজেন্সিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দেশটির রেভলিউশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল কাশেম সোলেইমানি বলেন, ‘আল খলিফা নিশ্চয় জানেন, শেখ ইসা কাসিমের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ছিল একটা সীমারেখা, আর তা অতিক্রমের ফলে বাহরাইন এবং এই অঞ্চল উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। এমন সিদ্ধান্তের ফলে মানুষের সশস্ত্র প্রতিরোধ ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বাহরাইনের এই পদক্ষেপে তার উদ্বিগ্ন। শেখ আল কাসিমের নাগরিকত্ব বাতিলের কোনও যৌক্তিকতা তারা খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন।
উইকিলিকসে প্রকাশিত মার্কিন তারবার্তায় শেখ ইসা কাসিমকে ওয়েফাক-এর তাত্ত্বিক নেতা বলে উল্লেখ করা হয়। তাকে বাহরাইনের সমগ্র শিয়া সম্প্রদায়ের তাত্ত্বিক নেতা বলে মনে করা হয়।
মার্কিন তারবার্তায় আরও বলা হয়, আল কাসিম ১৯৯০-এর দশকে ইরানের কোম শহরে পড়াশোনা করেন। তিনি ইরাকি শহর নাজাফেও অনেক সময় কাটান, ওই শহরটি অন্যতম প্রধান শিয়া শিক্ষাকেন্দ্র।
সূত্র: বিবিসি।
আরও পড়ুন:
ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনি বামপন্থীরা অনশনে
ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টায় গ্রেফতার ব্রিটিশ নাগরিক
‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতার ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে বাংলাদেশের’
/এসএ/