ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর আজ বুধবার (১২ ডিসেম্বর) রাজ্যসভায় পেশ করা হতে পারে। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি এখবর জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, লোকসভায় পক্ষে ভোট দিলেও রাজ্যসভায় বিলটির বিপক্ষে ভোট দিতে পারে বিজেপি’র সাবেক জোটসঙ্গী শিবসেনা। তবুও বিলটি পাস হয়ে যেতে পারে।
সোমবার মধ্যরাতে লোকসভার অনুমোদন পায় ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্টমেন্ট) বিল, ২০১৯’ শীর্ষক এ বিতর্কিত বিল। ৩১১-৮০ ভোটে পাস হয় বিলটি। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় এটি উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার। এই বিতর্কিত বিলে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে নিপীপড়নের জন্য পালিয়ে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
এ বিলের প্রতিবাদে আসাম ও ত্রিপুরায় ছাত্র সংগঠনগুলোর ডাকা বনধ কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে। দুই রাজ্যে বহু জায়গায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় মানুষজনের দেখা নেই। কোথাও কোথাও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে নিজেদের ক্ষোভের জানান দিচ্ছে আন্দোলনকারীরা। ত্রিপুরায় সড়ক এমনকি রেল লাইন অবরোধ করে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে মানুষ। সড়ক পথ, রেল পথ বন্ধ; সব মিলিয়ে স্তব্ধ ত্রিপুরা। মণিপুর,অরুণাচলেও রাজপথে নেমেছে বহু মানুষ।
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে, লোকসভায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সোমবার ভোটে বিলটির পক্ষে ছিল ৩১১ আর বিপক্ষে ৮০ ভোট। কিন্তু ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যা কম। এখানে বিলটি পাসের জন্য ১২১ জন সদস্যের সমর্থন দরকার। এনডিএ জোটের রয়েছে ১১৬ জন। দলটির নেতাদের আশা, অন্যদের সমর্থন নিয়ে ১৩০ ভোট পেয়ে বিলটি পাস হয়ে যাবে।
সম্ভাব্য এই ১৪ জনের মধ্যে রয়েছে বিজেপির সাবেক জোটসঙ্গী শিবসেনার সদস্যসংখ্যা। লোকসভায় বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে তারা। তবে রাজ্যসভায় বিলের পক্ষে তারা ভোট দেবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। জোটের বাইরে থাকা দল বা সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন নবীন পট্টনায়েকের বিজেডির ৭ জন সদস্য।
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-এর পক্ষে রয়েছেন ৬৪ জন সদস্য, এছাড়া অন্যান্যদের পক্ষ থেকে ৪৬ জনের সমর্থন পাওয়ার আশা কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন এই জোটের। অন্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি এবং সিপিআইএম।, ফলে ইউপিএ-এর সংখ্যা গিয়ে পৌঁছাতে পারে ১১০।