নিউ ইয়র্কে এক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন লিজ ক্লেগ। সেখানেই তিনি তার সেলফোনে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে একটি ক্ষুদে বার্তা পান। তাতে যা লেখা ছিল তা এরকম, আমার সহযোগিতা প্রয়োজন। ড্রাইভার গাড়ি থামাচ্ছে না, অক্সিজেন নেই, কোনও সিগন্যাল নাই। লরিতে আটকা।
এই ক্ষুদে বার্তাটি পাঠিয়েছে সাত বছর বয়সী আফগান বংশোদ্ভূত শরণার্থী শিশু আহমেদ। সাহায্যের আহ্বান জানিয়ে পাঠানো এই বার্তার ভিত্তিতেই লিজ কয়েক হাজার মাইল দূর থেকে লরিতে আটকা পড়া ১৫ জনের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন।
শরণার্থী বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবক ও ৫০বছর বয়সী লিজ ক্লেগ ফ্রান্সের কালাইস শরণার্থী শিবিরে কাজ করার সময় নিজের মোবাইল নম্বর আহমেদসহ অনেককেই দিয়েছিলেন। ওই সময়ই আহমদের সঙ্গে লিজের পরিচয়। আহমেদের বার্তাটি পাওয়া মাত্র লিজ লন্ডনভিত্তিক দাতব্য সংস্থা হেল্প রিফিউজি’র তানিয়া ফ্রিডম্যানকে ফোন করে ঘটনাটি জানিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
তানিয়া ফ্রিডম্যানও দ্রুত পদক্ষেপ নেন। লিজের কাছ থেকে আহমেদের মোবাইল নম্বর নিয়ে তা ট্র্যাক করে পুলিশ ওই স্থানটির খোঁজ পায়। লিচেস্টারের কাছে আহমেদ ছাড়া আরও ১৪ শরণার্থীকে দমবন্ধ ও মৃতপ্রায় অবস্থায় একটি লরির মধ্যে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: গাছের পাতা যেভাবে বাঁচিয়ে দিলো ৩ নাবিককে
তানিয়া জানান, আহমেদসহ ওই ১৫ জনকে উদ্ধার করার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো কর্মকাণ্ডেই স্নায়ুর ওপর অত্যন্ত চাপ পড়েছে তার। শেষ পর্যন্ত তাদের শ্বাসরোধে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন না কেউই।
তিনি আরও জানান, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সময় লিজই আহমেদসহ আরও অনেক শিশুকে মোবাইল ফোন দিয়েছিলেন যেনও তারা বিপদের সময় তা ব্যবহার করতে পারে।
আরও পড়ুন: বিমানে জিহাদের প্রসঙ্গ তুলে ৯ মাসের কারাদণ্ড!
উদ্ধারের পর আহমেদকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকি ১৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসন কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ। সূত্র: মেট্রো, নিউজ টুডে।
/ইউআর/এএ/