চলতি বছরের ২৩ জুন ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকা না থাকার প্রশ্নে নিজেদের রায় গণভোটে দেবেন ব্রিটিশ জনগণ। সেদিনই আলোচিত এই ব্রেক্সিট ইস্যুর পরিণতি নির্ধারিত হবে। তবে এর আগেই শুরু হয়ে গেছে এক ভীষণ বাকযুদ্ধ। এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটন ব্রিটেনের ইইউ থেকে বের হওয়ার বিপক্ষে তাদের শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। ব্রেক্সিটের পক্ষের নেতারা ওবামা-হিলারির এ অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।
ব্রিটেন সফররত বারাক ওবামা রবিবার (২৪ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইইউ ছাড়লে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে ব্রিটেনের দশ বছর আলোচনা করে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্রিটেনের যে দরকষাকষির ক্ষমতা রয়েছে, তা ইইউ-র জন্যই।
আরও পড়ুন: ব্রেক্সিট: কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর
তিনি জানান, ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এতো সহজে বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি করতে পারছে, তার কারণ হলো ইউরোপের বিশাল বাজার। ওবামা সাক্ষাৎকারে ২৩ তারিখের গণভোটে ব্রিটেনের জনগণের উদ্দেশে ‘ব্রেক্সিট’-এর বিপক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
হিলারি ক্লিনটনও ‘ব্রেক্সিট’-এর বিপক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। হিলারির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জেক সুলিভান সংবাদমাধ্যম অবজারভারকে বলেন, হিলারি মনে করেন, ট্রান্সআটলান্টিক সহযোগিতা খুবই জরুরি। আর ইউরোপ ঐক্যবদ্ধ থাকলেই ওই সহযোগিতা সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তিনি ইইউতে ব্রিটেনের শক্তিশালী অবস্থান প্রত্যাশা করেন।
আরও পড়ুন: ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে আসার প্রশ্নে ওবামার হুঁশিয়ারি, ক্ষুব্ধ ইইউবিরোধীরা
এদিকে, শুক্রবার ‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বারাক ওবামা বলেন, ‘ইইউ-র সদস্যপদ ব্রিটেনের বৈশ্বিক প্রভাব বাড়িয়েছে। ওই সদস্যপদ দেশটির বৈশ্বিক প্রভাবের জন্য হুমকি নয়।’ ওবামা বলেন, ব্রিটেন ইইউতে থাকবে কিনা – সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধু ব্রিটিশ নাগরিকদেরই রয়েছে। তবে ব্রিটেনের ইইউ সদস্যপদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘গভীর আগ্রহ’ রয়েছে।
ওবামার এমন বক্তব্যকে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন ব্রেক্সিটের পক্ষের নেতারা। ব্রিটেনের ইইউবিরোধী রাজনৈতিক দল ইন্ডিপেন্ডেন্টস পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজে বলেছেন, ‘ওবামার এই ব্যাপারে জড়ানো ঠিক নয়।’
সাবেক মন্ত্রী ইয়ান ডানকান স্মিথ বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, একজন মার্কিন নেতার এই ব্যাপারে জড়িত হওয়া কীভাবে যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।’
আরও পড়ুন: একজন নারী ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাকে ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যের গল্প
এছাড়া প্রায় ১০০ জন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য তাদের অসন্তোষের বিষয়টি লন্ডনের মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
ব্রিটেন থেকে ওবামা রবিবার জার্মানিতে যাবেন। সেখানে তিনি জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলসহ অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকেও ‘ব্রেক্সিট’ ইস্যুটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, ডয়চে ভ্যালে।
/এসএ/এএ/