রাজধানীর তেজগাঁও থেকে প্রতারণার অভিযোগে আব্দুল মালেক নামের এক ব্যক্তিকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে র্যাব। চাকরি দেওয়ার নামে জাল সনদ-সিল ব্যবহারসহ নানা কৌশলে মালেক চাকরিপ্রার্থীদের সাথে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানায় র্যাব।
সোমবার (১৯ জুলাই) দুপুরে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, “আব্দুল মালেককে গত শনিবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মনিপুরী পাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে চাকরি দেওয়ার নামে জাল সনদ-সিল ব্যবহার করার মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল কাগজপত্র ও সিল জব্দ করা হয়েছে।"
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণা করে টাকা আয় করার কথা স্বীকার করেছে মালেক।
অভিযুক্ত মো. আব্দুল মালেকের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। সে স্থানীয় একটি কলেজ থেকে এমকম ডিগ্রী লাভ করে। শিক্ষাজীবন শেষ করে ২০০৪ সালে ফার্মগেটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি নেয়। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে ২০১৫ সালে চাকরিচ্যুত হয়।
প্রতারণায় অভিযুক্ত মালেক দেশের বিভিন্ন জেলায় এজেন্ট নিয়োগ করে চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহের কাজ শুরু করে। সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে সে এমভিশন নামে একটি কোচিং সেন্টার চালু করে। স্ট্যাম্পে চুক্তির মাধ্যমে টাকা অথবা জমির দলিল জমা রাখার শর্তে চাকরিপ্রার্থীদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় সে। চুক্তিশেষে বিভিন্ন মাধ্যম যেমন- লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থীর ছবি পরিবর্তন, প্রশ্নফাঁস বা প্রার্থীকে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পাশ করানো হয়। যারা এই প্রক্রিয়ায় চাকরি পেতেন তাদেরকে জিম্মি করার উদ্দেশ্যে তাদের সব ধরণের কাগজপত্র জমা রাখতো যাতে সে। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে সম্পদ গড়ে তুলে মালেক।বিভিন্ন ব্যাংকে একাধিক একাউন্টে ৫০ লাখের বেশি টাকার এফডিআর রয়েছে তার। এছাড়া ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন ফোর্ডনগর এলাকায় তার ৮.২৫ শতাংশ জমি রয়েছে। রাজধানীর মনিপুরী পাড়া এবং ৬০ ফিট এলাকায় তার তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া কুষ্টিয়ার সদর থানাধীন বড়িয়া এলাকায় জাহান সুপার মার্কেট ছাড়াও নিজ গ্রামে ২৫ বিঘা জমি এবং একটি পাকা বাড়ি রয়েছে। কুষ্টিয়ায় জাহান গ্রুপ নামে একটি কনজ্যুমার প্রোডাক্ট কারখানা রয়েছে তার। কুষ্টিয়া এক্সপ্রেস নামে তার একটি বাস ও ৪টি ট্রাক রয়েছে বলে র্যাব জানায়।