ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিওতে ১১১টি রাষ্ট্র বাংলাদেশকে নিয়ে মন্তব্য বা সুপারিশ করেছে। এরমধ্যে ৯০ ভাগের মতো দেশ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতির বিষয়ে প্রশংসা করে গঠনমূলক সুপারিশ করেছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) জেনেভায় ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউতে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সাড়ে চার বছর পরপর এই রিভেউতে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের বক্তব্য তুলে ধরে ও সুপারিশ প্রদান করে। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী পর্যালোচনায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকের পর জুম মিটিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে রিভিউতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বেশকিছু গঠনমূলক সুপারিশ করেছে।’
১০ ভাগ দেশ বাংলাদেশের বিষয়ে কিছুটা ক্রিটিক্যাল ছিল। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ কীভাবে যোগাযোগ রাখছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়ামের কথা বলেন– এদের সবাই আমাদের যে অগ্রগতি হয়েছে, সেটিকে প্রশংসা করেছে। কিছু কিছু বিষয়ে যেমন- নির্বাচনের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে। তারা বলেছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা। তারা কিন্তু জোরালোভাবে সমালোচনা করেনি। তবুও আমি ধরে নিয়েছি যে, একটি কথাও যদি তারা বলে থাকে, সেটিকে বাদ দিয়ে ৯০ ভাগের কথা আমি বলেছি।’
একমাত্র শুধু স্লোভাকিয়া এবং কানাডা কিছুটা নেতিবাচক কথা বলেছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘এ দুটো দেশও যে খুব শক্ত করে বলেছে বিষয়টি সে রকম নয়। কিন্তু এ দুটি দেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো, এমনকি যখন তারা সমালোচনা করছিল, তখন খুব হালকাভাবে করছিল।’
তিনি বলেন, ‘গুম ও হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের যে অবস্থান এবং আমরা কী কাজ করেছি, সেটি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি। সেই উল্লেখ করার পর তারা আমাদের কোনও প্রশ্ন করেনি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বলেছে, তারা চায় আমাদের ইউপিআর সফল হোক। কিছু কিছু জিনিসের বিষয়ে আমরা যেন পদক্ষেপ নেই। সেখানে মনে হয়, যে সুপারিশগুলো পেয়েছি, আমরা সেগুলো পরীক্ষা করবো।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা তাদের সুপারিশগুলো দেখবো এবং দেখার পরে মতামত জানাবো। আমাদের প্রশ্ন করার সুযোগ তারা আর পাবে না। তারা রিপোর্ট পেশ করবে। তারা যে সুপারিশগুলো করেছে, সেগুলোর বিষয়ে আমাদের অবস্থান এবং আমরা কী কী পদক্ষেপ নেবো, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সেটা তারা জানতে চাইবে।’
নির্বাচনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
‘কয়েকটি দেশ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করেছিল এবং তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। যেমন- যুক্তরাজ্য এবং বেলজিয়াম। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের বিষয়ে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি’, বলে তিনি জানান।