আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো অনেক অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে— যেখানে জাপানি বিনিয়োগকারীদের আলাদাভাবে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সই করতে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এসময় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, এই চুক্তি থেকে দুইপক্ষ কী পরিমাণ লাভবান হবে, সেটা আগে বলা কঠিন। তবে এটি কেবল শুল্কের সঙ্গেই সম্পর্কিত না, সেবা খাত, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নতকরণসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। এ চুক্তি থেকে জাপান-বাংলাদেশ দুদেশই লাভবান হবে। ২০২৬ সালের মধ্যেই চুক্তিটি করতে হবে। যে কারণে বর্তমান পরিস্থিতি একটু ভিন্ন।
বাণিজ্য সচিব জানান, জাপানে রফতানি ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশে বাণিজ্য করতে তাদের যদি কোনও সমস্যা হয়, সেটা আলাদাভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি। কাজেই জাপানের সঙ্গে অংশীদারত্ব চুক্তি সই নিয়ে আমরা আশাবাদী হতে পারি। আমরা আশাবাদী, ২০২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর কিংবা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে আমরা চুক্তি সই করতে পারবো। কারণ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের কারণে ২০২৬ সালের নভেম্বরে আমরা সেখানে শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাতে যাচ্ছি। কিন্তু এরই মধ্যে চুক্তি সই হলে, সেটা হারাতে হবে না বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) শেষ পর্যন্ত কি সম্পাদিত হবে, নাকি আটকে যাওয়ার শঙ্কা আছে— এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। কারণ প্রথমবারের মতো জাপানের মতো একটি বড় দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সই (ইপিএ) নিয়ে সত্যিকারের কোনও আলোচনা হতে যাচ্ছে। জাপান একটি উন্নত দেশ, অনেক বড় অর্থনীতি, আমরা তাদের সঙ্গে আমরা অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে যাচ্ছি। এর আগে শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের মতো ছোটোখাটো অনেক অর্থনীতির সঙ্গে ইপিএ নিয়ে আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনও আলোচনা হয়নি। তাদের সঙ্গে এ সম্পর্কিত আলোচনায় যাওয়া যায় কিনা, আমরা সেই চেষ্টাই করেছি। সম্প্রতি আমরা ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের সঙ্গে তিন দফা বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু তা ছিল অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)। খুবই সীমিত সুযোগ। ধরুন, আমরা কিছু পণ্য বাছাই করি, যেগুলো তাদের শুল্কমুক্ত করে দেবো, তারও এভাবে আমাদের কিছু পণ্য দেবে। এখানে অন্য কোনও সুযোগ থাকে না। কিন্তু জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) কেবল বাণিজ্যের মধ্যেই সীমিত থাকবে না, এখানে বিনিয়োগ, সরকারি ক্রয়সহ সেবা খাতেও বিনিয়োগ হবে।