X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

জঙ্গিবাদ দমনে প্রত্যেক এলাকায় কমিটি গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১২ জুলাই ২০১৬, ২২:০৮আপডেট : ১২ জুলাই ২০১৬, ২২:৩৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ দমনে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেক এলাকায় জঙ্গিবাদবিরোধী কমিটি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি একাত্তরের চেতনায় সবাইকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।  তিনি বলেন, আমরা শান্তি চাই, নিরাপত্তা চাই। হামলা, সন্ত্রাস চাই না। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে, আমরা শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হবে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ।
মঙ্গলবার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়ে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।|
ভিডিও কনফারেন্সে তিনি আরও বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে এরই মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা মতামত পেয়েছি। এসব মতামত আমাদের কাজে লাগবে। জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে সবাইকে জঙ্গি প্রতিরোধে সচেতন করতে হবে। শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। উন্নয়ন অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।
এর আগে দুপুরে গণভবনে আয়োজিত আরেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সন্তানদের বিষয়ে অভিভাবকদেরকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কোথায় নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, তাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। তারা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মিশে তার খোঁজ-খবর নিতে হবে। তাদের প্রতি আপনারা খেয়াল রাখবেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরাও খোঁজ-খবর রাখবেন। আমরা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের উৎস খুঁজে বের করবো।

সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মসজিদের ইমাম, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়ের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। কোনও জঙ্গির স্থান, সন্ত্রাসের স্থান  হবে না বাংলাদেশে। জঙ্গি হামলায় উচ্চ শিক্ষিতদের জড়িত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা উচ্চ শিক্ষিত, ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াশোনা করছে, সেই ছেলে-মেয়েরা কীভাবে ধর্মান্ধ হয়ে যাচ্ছে, নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে পরিবার থেকে? অথচ প্রশ্ন আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। এ নিয়ে রিপোর্ট দিতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো। দেখা যাচ্ছে অনেকে স্বেচ্ছায় গুম হয়ে এখন জঙ্গি হামলা করছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ সবাইকে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করার তাগিদ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমার বিশ্বাস আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবো। ইসলাম ধর্মকে যেন কেউ কলুষিত করতে না পারে সেজন্য সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। কেউ বিপথে পাঠাতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যাচ্ছে কিনা, কেউ নিচ্ছে কিনা-দুটোই খুঁজে বের করতে হবে।

প্রত্যেক ইউনিয়ন, থানায় জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানো হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিটিগুলো কারও জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকলে তা খুঁজে বের করবে। কমিটির মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার কল্যাণে কাজ করতে চাই, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জঙ্গি দমনে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমি চাই দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ। জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের ফলেই এসব সম্ভব হচ্ছে। দেশবাসীও সমর্থন করছেন।  তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সবক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু এটা কারো কারো সহ্য হয় না। এটা বাঁধাগ্রস্ত করতেই এ ধরনের কর্মকাণ্ড।

বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত করার কথা পুনর্ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো। এ লক্ষ্যে নানা প্রকল্প রয়েছে, সেখানে বিদেশিরা কাজ করেন। তাদের নিরাপত্তা জরুরি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও এলাকার মানুষ এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করবেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সর্বস্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিমুক্ত করতে পারবো। সবাই একযোগে কাজ করলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিন খেলতে পারবে না।

পরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মসজিদের ইমাম, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা শুনেন। এসময় তিনি তাদের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।  শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।

 আরও পড়তে পারেন: কলম্বোর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন নিশা দেশাই

আরও পড়তে পারেন: প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

আরও পড়ুন:মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ১২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত




পিএইচসি/এমএসএম /  

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সংকট থেকে উত্তরণে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান মেননের
সংকট থেকে উত্তরণে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান মেননের
কানে ঝুলছে বাংলাদেশের দুল!
কান উৎসব ২০২৪কানে ঝুলছে বাংলাদেশের দুল!
ধোনি-জাদেজার লড়াই ছাপিয়ে প্লে অফে বেঙ্গালুরু
ধোনি-জাদেজার লড়াই ছাপিয়ে প্লে অফে বেঙ্গালুরু
হীরকজয়ন্তীর পর সংগঠনে মনোযোগ দেবে আ.লীগ
হীরকজয়ন্তীর পর সংগঠনে মনোযোগ দেবে আ.লীগ
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?