গুলশান হামলার পর মারজানের কাছে হামলাকারীরা বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে ছবি পাঠায়। মারজান হামলার সেই ছবিগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করে। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্তি কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলার পর জঙ্গিরা গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে যে ছবি বাইরে ছড়িয়ে দিয়েছিল, সেই ছবি মারজানের কাছে এসেছিল। সে ওই লিংক ওপেন করেছিল।’
তিনি আরও জানান, ‘জেএমবির প্রচার বিভাগের দায়িত্বে ছিল মারজান। গুলশান হামলার জঙ্গিদের সঙ্গে অ্যাপসের মাধ্যমে সে কথা বলেছিল। হলি আর্টিজানের নাশকতার ভেতরের ছবি তার কাছে পাঠানোর পর সেগুলোর প্রশংসা করেছিল মারজান।
মারজান সম্পর্কে পুলিশ জানায়, ‘মারজান’ তার সাংগঠনিক নাম। সে জেএমবি’র একজন সদস্য, বাংলাদেশের নাগরিক। সে জেএমবির অন্য সদস্যদের কাউন্সেলিংও করাতেন।
মারজান সম্পর্কে একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, মারজান হচ্ছে জঙ্গিবাদের ইতিহাসে সব থেকে কম বয়সী কমান্ডার। ধারণা করা হচ্ছে, মারজান নিও জেএমবি'র অপারেশন ও ন্যাশনাল কমান্ডার। সে অত্যন্ত চালাক ও ধূর্ত। দলে উচ্চ শিক্ষিত নতুন সদস্যদের ভেড়ানোর মূল চাবিকাঠি তার হাতে। সে-ই নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজে সমন্বয় করে থাকে। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা বাড়ি সম্পর্কে এখনও জানা সম্ভব হয়নি । গুলশান হামলার ঘটনায় শিক্ষিত একটি শ্রেণিকে রিক্রুট, ট্রেনিং এবং অপারেশনে পাঠানোর পেছনে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য।
তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তার উপরে আরও ২/৩ জন রয়েছে। তবে সে অপারেশন কমান্ডার হিসেবে দলের চাবিকাঠি নাড়ায়’
এবিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ছানোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, "ধারণা করছি তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলে উচ্চ শিক্ষিত শ্রেণি থেকে জঙ্গি দলে রিক্রুটমেন্ট এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। যদিও এ বিষয়ে আমাদের কাছে অনেক তথ্য রয়েছে, তবে আরও পরিষ্কার ধারণার জন্যই তাকে গ্রেফতার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। মারজানকে গ্রেফতারে নাগরিদের সহযোগিতার জন্য আজ শুক্রবার কাউন্টার টেরোরিজম চিফ তার ছবিটি প্রকাশ করেছেন। তাই সবাইকে Hello CT অ্যাপ, অথবা অন্য যে কোনও প্রক্রিয়ায় তার পরিবার, শিক্ষা, পূর্বের কর্মক্ষেত্র, বন্ধু-বান্ধব, বিভিন্ন সময় তার অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, হলি আর্টিজানে হামলার রাতে জঙ্গিরা 'উইকার অ্যাপ' (Wickr) নামে একটি বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে বাইরে যোগাযোগ করে এবং ছবি পাঠায়। পুলিশের দাবি, হাসনাত করিম তার মোবাইল থেকে এই অ্যাপসটি ডাউনলোড করে জঙ্গিদের দিয়েছিলেন।
/এনএস/এপিএইচ/
আরও পড়ুন: