X
বুধবার, ২১ মে ২০২৫
৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাহাড়ে পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের নতুন বসতি

আমানুর রহমান রনি, কক্সবাজার থেকে
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৯:৫০আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:৩৭

পাহাড়ে পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের নতুন বসতি নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন বন ও পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের কেউ কেউ ঝুঁকিপূর্ণ হলেও পাহাড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে বাঁশ এনে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি করছেন টং ঘর। বনবিভাগের যেসব জায়গায় স্থানীয়দের তেমন যাতায়াত নেই, সেসব জায়গাতেই তারা গড়ে তুলছেন এসব বসতি। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বনবিভাগের সামাজিক বনায়নের আওতাধীন এলাকা ও পাহাড় কেটে রোহিঙ্গাদের ঘর তৈরি করতে দেখা গেছে।

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অদূরে বালুখালীর একাধিক পাহাড়ে মংডু থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা ঘর তৈরি করছে। দীর্ঘ এলাকা নিয়ে তারা তৈরি করছে ছোট ছোট ঘর। ওই পাড়াটিতে আবুল বাশার নামে রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা হয়। তিনি সেসময় ঘর তৈরি করছিলেন। পাহাড়ে পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের নতুন বসতি

তিনি তার আঞ্চলিক ভাষায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় ১৪ দিন ধরে আমি, আমার স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আছি। আর কতদিন এভাবে থাকবো? আমরা বাঁচার জন্য বাংলাদেশে আসছি। এখন কি মরে যাবো?’

একই পাহাড়ে ঝুপড়ি তৈরি করে থাকছেন মসুদা বেগম। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) পলিথিন ও বাঁশ দিয়ে এই ঘরটি তৈরি করেছেন তার স্বামী রবিউল্লাহ। তিন সন্তানের জননী মসুদা বলেন, ‘বড় বাঁশের দাম ৩শ টাকা, ছোট বাঁশ দেড়শ টাকা। টাকা দিলে পাহাড়ের কাছে নিয়ে এসে বাঁশ পৌঁছে দিচ্ছে বিক্রেতারা।’

শাহানূর নামে আরেক রোহিঙ্গা নারী তার আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘আমার স্বামী ইউনূচ আলী সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা গেছে। আমি পাঁচ সন্তান নিয়ে সবার সঙ্গে চলে এসেছি। এখন এখানে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা তো করতে হবে।’

পাহাড়ে পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের নতুন বসতি

রোহিঙ্গা দম্পতি নূর বেগম ও মো. আলম কোদাল দিয়ে মাটি কেটে পাহাড়ের গায়ে খোপ তৈরি করছিলেন। পাশেই মাটিতে বসেছিল তাদের সন্তানেরা।

পাহাড় ছাড়াও অনেক রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নভাবে উখিয়ার সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের ভেতরে পলিথিন ও বাঁশ দিয়ে ঘর তৈরি করে থাকছেন। উখিয়া উপজেলা থেকে বান্দরবান যাওয়ার পথে মাইলের পর মাইলজুড়ে চোখে পড়ে শরণার্থী রোহিঙ্গাদের সারি। তাদের কেউ রাস্তার পাশে, কেউ গাছে বসে বা শুয়ে আছেন। অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন।

দলে দলে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গাদের এমন অসহায় অবস্থা দেখে স্থানীয়রাও তাদের বিষয় অনেকটা নমনীয় হয়ে উঠেছেন। রোহিঙ্গারা ঘর তুললেও কেউ বাধা দিচ্ছেন না। বরং তাদের খাবার দিয়ে সহায়তা করছেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। বন বিভাগের শত শত একর জায়গায় বসতি করলেও তাতে বাধা দিচ্ছে না সরকারও।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আলী কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের ইচ্ছামতো ঘর তৈরি করছে। বিষয়টি আমরা জানছি, দেখছি। তবে এই মুহূর্তেই রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করতে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। কারণ উচ্ছেদে যাওয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ দরকার। এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না।’

আরও পড়ুন- সংঘাতে না জড়িয়েই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায় বাংলাদেশ


/টিআর/আপ-এফএস/
সম্পর্কিত
ভারতে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী কুড়িগ্রামে পুশইন, আটক ৫
রোহিঙ্গাদের জন্য ৩১৬ কোটি টাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান
নাফ নদে আরাকান আর্মির গুলিতে বাংলাদেশি দুই জেলে আহত
সর্বশেষ খবর
আবারও মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি, নারীদের যৌন হয়রানি
আবারও মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতি, নারীদের যৌন হয়রানি
বিএনপিপন্থি উপদেষ্টাদের বের করে দেওয়ার দাবি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
বিএনপিপন্থি উপদেষ্টাদের বের করে দেওয়ার দাবি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
উন্নত আইনশৃঙ্খলা না হলে ব্যবসা-বিনিয়োগে আস্থা ফিরবে না: ডিসিসিআই সভাপতি
উন্নত আইনশৃঙ্খলা না হলে ব্যবসা-বিনিয়োগে আস্থা ফিরবে না: ডিসিসিআই সভাপতি
এফবিসিসিআই ও আইবিএফবি’র মধ্যে খাতভিত্তিক গবেষণায় যৌথ সহযোগিতা চুক্তি
এফবিসিসিআই ও আইবিএফবি’র মধ্যে খাতভিত্তিক গবেষণায় যৌথ সহযোগিতা চুক্তি
সর্বাধিক পঠিত
ধানমন্ডি থানা থেকে ৩ জনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার ঘটনায় হান্নান মাসউদকে শোকজ
ধানমন্ডি থানা থেকে ৩ জনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার ঘটনায় হান্নান মাসউদকে শোকজ
কক্সবাজার সৈকতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা, দিচ্ছেন প্রশিক্ষণ
কক্সবাজার সৈকতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা, দিচ্ছেন প্রশিক্ষণ
কে হচ্ছেন নতুন পররাষ্ট্র সচিব 
কে হচ্ছেন নতুন পররাষ্ট্র সচিব 
পাসপোর্টের সেই বিতর্কিত তিন পরিচালকের ‘বিদায়ঘণ্টা’ বাজছে
পাসপোর্টের সেই বিতর্কিত তিন পরিচালকের ‘বিদায়ঘণ্টা’ বাজছে
এজলাসের ভিডিও ভাইরাল: বিচারককে আইনের আওতায় আনার দাবি
এজলাসের ভিডিও ভাইরাল: বিচারককে আইনের আওতায় আনার দাবি