শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভা নির্বাচন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে জনগণ নৌকাকেই বেছে নেবেন, এমনটাই আশা করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে বিজয়ী হওয়ার দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর ভোটাররা জানিয়েছেন তারা সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই ভোট দেবেন।
আগামী ২ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঘোড়াঘাট পৌরসভা নির্বাচন। পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ৯৪৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৭৫৬ জন এবং নারী ভোটার ১০ হাজার ১৯১ জন। মোট ৯টি কেন্দ্রের ৭৪টি কক্ষে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিষ্ঠার পর এ পৌরভায় এটি তৃতীয় নির্বাচন। আগের দুটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করেন। বিএনপি দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ না করলেও সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারিকেলগাছ প্রতীকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার মিলন এবং জগ প্রতীক নিয়ে
উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে ইউনুস আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটার ইসমাইল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখনও পৌরসভার অনেক ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট খারাপ রয়েছে। যাদের এলাকা ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করবে বলে মনে হয় তাদেরই ভোট দেবো। নির্বাচনের আগে সব প্রার্থীই আশ্বাস দেই, কিন্তু কাজ হয় না।’
ভোটার শিউলি আকতার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই। আমরা চাই, ভোটের যেন সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে। প্রশাসনের যেন কোনও ঝামেলা না হয়।’
বর্তমান মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার মিলন বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে আমি ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র। এই ১০ বছরে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ড্রেন, কালভাটসহ ঘোড়াঘাট পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন
করেছি। বাকি কাজগুলো আবারও জয়ী হলে সম্পন্ন করবো। এ কারণে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এতে করে নীরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে আমি তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে বিজয়ী হবো। এ পর্যন্ত আমি নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতার প্রমাণ পেয়েছি। তারা সঠিকভাবে দেখভাল করছেন। কোথাও প্রচারণায় বাধাপ্রাপ্ত হয়নি।’
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউনুস আলী বলেন, ‘আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নৌকা প্রতীক নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছি। এতে করে সাধারণ মানুষ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। মানুষ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা মার্কাকে ভোট দেবে। সেইসঙ্গে এবারে মেয়রের পরিবর্তন হবে।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাচন অফিসার শাহজাহান মানিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সে মোতাবেক কমিশন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনকে ঘিরে কারো কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নির্বাচনি পরিবেশ কমিশনের অনুকূলে রয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ১৩ দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিনের জন্য আরও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ভোটকেন্দ্রে সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।’