দেশের প্রখ্যাত আলেম, লেখক, গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী আল আজহারী শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। জানাজা শেষে তাকে মিরপুর-১১ জান্নাতুল মাওয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদের পরিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ৮২ বছর বয়সী মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদের স্ত্রী, তিনি ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
আবদুল্লাহ বিন সাঈদ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লেখক-গবেষক ও সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদাররেসিনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
১৯৭৫ থেকে ২০০৫ সাল অবধি গণভবন ও সচিবালয় মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। তিনি তাফসির, হাদিস, ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ে আকর গ্রন্থাবলি অনুবাদ করেন। ইফাবার ইসলামি বিশ্বকোষ ও সিরাত বিশ্বকোষের অন্যতম লেখক ও সম্পাদক। বৃহদায়তন ইসলামি আইন ও আইনবিজ্ঞান গ্রন্থটিরও অন্যতম সম্পাদক তিনি।
আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদীর জন্ম ১৯৪২ সালের ২৯ মে সিলেটের টুকেরগাঁওয়ে। তিনি সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। পরে ঢাকায় এসে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বহু দেশ সফর করেন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৬ সালে ইমামদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য সর্বপ্রথম যে দলকে মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিল, তিনি ছিলেন ওই দলের অন্যতম সদস্য।
১৯৭৩ সালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে সর্বপ্রথম সিরাতুন্নবী মাহফিলের আয়োজন করেন তিনি, যার সভাপতিত্ব করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
লেখক ও গবেষক হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে পরিচিত ছিলেন। দৈনিক আজাদ ও মাসিক মোহাম্মদীতে লেখালেখির মাধ্যমে তার বিকাশ। তিনি দীর্ঘদিন মহানবী (সা.)-এর জীবনীর ওপর কয়েক যুগ ধরে ধারাবাহিক স্মরণিকা প্রকাশ করে সিরাত চর্চাকে সামাজিক বিস্তৃতি দেন।