জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ে থাকা হিজড়া জনগোষ্ঠী বিষয়ে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন সাবেক এক শিক্ষকের বক্তব্য এবং এ বিষয়ের পক্ষে আন্দোলনের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপপ্রয়াসের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানলাম, জাতীয় শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ে হিজরা জনগোষ্ঠী বিষয়ক অধ্যায়ে থাকা ‘শরীফার গল্প’ যে দুটি পৃষ্ঠায় আছে সে দুটি পৃষ্ঠা সবাইকে ছিঁড়ে ফেলার আহ্বান জানান ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক খণ্ডকালীন শিক্ষক। তিনি নিজেও পৃষ্ঠা দুটি ছিঁড়ে ফেলেন। এই খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ট্রান্সজেন্ডার আখ্যায়িত করে শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচারের মাধ্যমে এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করে দেশের স্বাভাবিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এই জনগোষ্ঠীর জীবনকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
মহিলা পরিষদ জানায়, জাতিসংঘের এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ। শিক্ষা কারিকুলামে দীর্ঘদিন থেকে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠী সম্পর্কে দীর্ঘদিনের নেতিবাচক মনোভাব পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকারের আলোকে মানস গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের এই জনগোষ্ঠী সম্পর্কে নেতিবাচক, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও আচরণ অগ্রহণযোগ্য এবং মানবাধিকারের পরিপন্থি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, রাষ্ট্র যেমন ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ পরিচয়ে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করবে, শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, পরিবারের সদস্যসহ নাগরিক সমাজের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সব ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠীর মানুষের সহবস্থান নিশ্চিত করাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।