অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গাজীপুরের টঙ্গী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী রুহুল ইমাম ও তার স্ত্রী আসমাউল হুসনা উল্কার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সেলিম মিয়া। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইন, মানি লন্ডারিং ও দণ্ডবিধির ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, টঙ্গি থানার সাবেক ওসি গাজী রুহুল ইমাম দুদকে যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন, সেটা যাচাই ও অনুসন্ধানে মোট ৮১ লাখ ৬ হাজার ১০৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া তার স্ত্রীকে ঋণ প্রদানসহ তার পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ২৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪০ টাকা। ফলে ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৭ টাকা।
তিনি আরও বলেন, উল্লিখিত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৭০ লাখ ১৩ হাজার ৬৭২ টাকা। এ ছাড়া তার মায়ের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা, বাড়ি ভাড়া বাবদ পাঁচ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক মিশন থেকে পাওয়া ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার আয়ের উৎস তিনি আয়কর নথিতে না দেখালেও অনুসন্ধানে তার এই আয়কে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য প্রতীয়মান হয়। এতে তার মোট বৈধ আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭২ টাকা।
অন্যদিকে স্ত্রী আসমা উল হুসনাকে দেওয়া আট লাখ টাকা ঋণ প্রদান ও পারিবারিক ব্যয়সহ ২৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪০ টাকার সম্পদসহ গাজী রুহুল ইমামের মোট সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় এক কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৭ টাকার। এতে দেখা যায়, তার বৈধ আয়ের চেয়ে ১৯ লাখ ৮ হাজার ১৭৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে সেটা ভোগদখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম আরও জানান, একইভাবে আসমা উল হুসনা উল্কার সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানকালে তার স্থাবর ও অস্থাবর এবং ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৯ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯৫ টাকার। অন্যদিকে তার দায়সহ মোট বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৫৯ লাখ ৩৬ হাজার ৮০০ টাকা।
এ ক্ষেত্রে আসমা উল হুসনার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এতে তিনি জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে পরস্পর যোগসাজশে নিজেদের দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে জানান তিনি।