X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হচ্ছে বেশি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট 
২০ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩০আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩০

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ৫০৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৫৫৫ জন নিহত ও ১ হাজার ৩১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২১০ জন নিহত ও ১২৯ জন আহত হয়েছে; যা মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ, নিহতের ৩৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও আহতের ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়। সংগঠনটি দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের দুর্ঘটনা সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। সেগুলো হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে প্রাথমিক উৎস থেকে সড়ক দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ডাটা ব্যাংক চালু করা। স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান। রাতের বেলায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা। সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা। রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা। ব্লাক স্পট নিরসন করা, সড়ক নিরাপত্তা অডিট করা, স্টার মানের সড়ক করিডোর গড়ে তোলা।

দেশে সড়কে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’র চলমান গতানুগতিক কার্যক্রম অডিট করে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করা, প্রাতিষ্ঠানিক অকার্যকারিতা সংস্কার করা।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত, ৬৪ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে পাঁচটি দুর্ঘটনায় সাত জন নিহত, চার জন আহত এবং একজন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৪৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯৯ জন নিহত এবং ১ হাজার ৯৯ জন আহত হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১১৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৫ জন নিহত ও ৩১৭ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ২৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৬৩ জন চালক, ৩৪ জন পথচারী, ৪৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৯ জন শিক্ষার্থী, ছয় জন শিক্ষক, ৯৩ জন নারী, ৫৮ জন শিশু, তিন জন সাংবাদিক, একজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- তিন জন পুলিশ সদস্য, এক আনসার, দুই সাংবাদিক, এক জন চিকিৎসক, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ১২৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৩৪ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৩৪ জন শিক্ষার্থী, ১৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ছয় জন শিক্ষক ও পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৭১০ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ বাস, ১৭ দশমিক ০৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৯ দশমিক ০৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বিবিধ কারণে, চাকায় ওড়না পিছিয়ে ০ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৩৯ ট্রোন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০ দশমিক ৭৯  শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ গুলো হচ্ছে, ট্র্যাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি। মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও  তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল। সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা । রাতের বেলায় ফক লাইটের অবাধ ব্যবহার।  সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ ক্রটি, ফিটনেস যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার ব্যাপক বৃদ্ধি। ফুটপাত বেদখল, যানবাহনের ত্রুটি,  ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি। অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।

/সিএ/ইউএস/
সম্পর্কিত
দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ২ জন নিহত
বনানীতে বাসচাপায় আহত মোটরসাইকেলের চালক মারা গেছেন
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
সর্বশেষ খবর
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ