ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি বলেছেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যেতে পারে ট্রান্সপারেন্সি অর্থাৎ স্বচ্ছতার মাধ্যমে। এই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দরকার আইনের সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহার।’
রবিবার (১৯ মে) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘ডিজিটালাইজেশন অব দ্য বাংলাদেশ ট্যাক্স সিস্টেম: দ্য নেক্সট ফ্রন্টিয়ার ফর হায়ার রিসোর্স মবিলাইজেশন’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘ডিজিটালাইজেশনের কথা এলেই আমাদের ফেরত যেতে হবে ২০০৯ সালে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন তখন আমাদের ভিশন ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি আমাদের সেই ভিশন ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ যে ডিজিটাল তা আমরা চারদিকে তাকালেই দেখতে পাই। আমাদের অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি সব কিছুই এর দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ জানুয়ারি আবারও বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এ নিয়ে তিনি পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি বর্তমানে আমাদের ভিশন দিয়েছেন, তা হলো ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং উন্নত বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ট্যাক্সেশনের কথা বলছি, করের কথা বলছি, এর সঙ্গে সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয়টিও থাকে। সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যেতে পারে ট্রান্সপারেন্সি অর্থাৎ স্বচ্ছতার মাধ্যমে। এই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দরকার আইনের সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা জনগণকে ক্ষমতায়ন করতে পারবো। আবার অংশীদারিত্বও বৃদ্ধি করতে পারবো।’
কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের যে দায়বদ্ধতা জনগণের প্রতি, তা প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে পারবো। এজন্য কর বা বাজেটের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন গুরুত্বপূর্ণ। এই ডিজিটালাইজেশন বাস্তবায়ন কেবল ট্যাক্স বা বাজেটের বিষয় নয়, সব ক্ষেত্রেই ডিজিটালাইজেশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সামাজিক বেষ্টনী থেকে শুরু করে যে কাজগুলো করেছেন, সব কিছুর সঙ্গে ডিজিটালাইজেশন রয়েছে। আমরা যদি নাগরিক অধিকার বা নাগরিক সুবিধাগুলোর দিকে তাকাই, এমনকি আমাদের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প, এক্সপ্রেসওয়ে বা মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগসূত্র স্থাপন করতে পারি, তাহলে প্রযুক্তির মাধ্যমে সবাই করও দিতে পারবো। ব্যক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যান্য সব পর্যায়ে সেভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ করার ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবো। এর মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারবো।’
সেমিনারে ‘বাংলাদেশ কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন: দ্য নেক্সট ফ্রন্টিয়ার ফর হায়ার রিসোর্স মবিলাইজেশন’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান। এতে বলা হয়, সমন্বয়হীনতায় ট্যাক্স লিকেজ বন্ধ করা যাচ্ছে না। কর আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ডিজিটালাইজেশন হলেও এর সুফল আদায় করা যাচ্ছে না। কাস্টমস, ভ্যাট, ট্যাক্স ও পেমেন্টে ডিজিটালাইজেশন হলেও খাতগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। যার কারণে ট্যাক্স লিকেজ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।