অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে জেল-জরিমানার নিয়ম বাতিলের দাবিতে মিরপুর, রামপুরাসহ রাজধানীর বিভন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সমাধানের আশ্বাসে সড়ক ছাড়েন তারা।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মিরপুর-১৩ নম্বরে অবস্থিত বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে সিএনজি চালকরা অবস্থান নেন। বিক্ষোভের কারণে সকাল থেকে মিরপুর-১০ থেকে মিরপুর-১৪ পর্যন্ত যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় অফিসগামী সাধারণ মানুষকে।
সিএনজিচালকরা ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, মিটারের বাইরে ভাড়া নিলে জেল-জরিমানার বিধান বাতিলসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি-মিরপুর জোন) মিজানুর রহমান আন্দোলনরত চালকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর চালকরা সড়ক ছেড়ে দেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে, সকালেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা রাস্তা ছেড়ে দেন। তবে পরে তারা মিছিল করে বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন এবং দাবিগুলো পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিক্ষোভকারী সিএনজি চালকরা জানান, তারা রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠালে ট্রাফিক সার্জেন্ট মামলা দেন ও হয়রানি করেন। এছাড়া মালিককে প্রতিদিন ১ হাজার ৪০০ টাকা জমা দিতে হয়, গ্যাস রিফিল করতে খরচ হয় ৬০০ টাকা। সব মিলিয়ে দৈনিক ২ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর সারা দিন গাড়ি চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।
চালকদের অভিযোগ, নতুন আইনে মিটারের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে ছয় মাসের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে, যা তাদের জন্য অস্বাভাবিক কঠিন। তারা এই আইন বাতিলের দাবি জানান। এছাড়া সিএনজি চালকদের আরও কয়েকটি দাবি ছিল ঢাকা মেট্রোর বাইরে অন্য জেলার গ্যাস বা পেট্রলচালিত ৪-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার ঢাকায় চলাচল বন্ধ করতে হবে। প্রধান সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরিয়ে দিতে হবে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ওই জরিমানা ও কারাদণ্ডের আদেশ দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। সংস্থাটির নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৫(৩) ধারা অনুযায়ী রুট পারমিটপ্রাপ্ত অটোরিকশাগুলো যেকোনও গন্তব্যে যাত্রী নিতে বাধ্য। চালকরা মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি বা আদায় করতে পারবেন না। যদি কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তাহলে আইনের ৮১ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। এছাড়া চালকের লাইসেন্স থেকে এক পয়েন্ট কেটে নেওয়ার বিধানও রয়েছে।