X
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হেলিকপ্টারে মাগুরা যাওয়ার সমালোচনায় ‘ঘরে বসে অ‍্যানালাইসিস কপচানো’ নিয়ে পাল্টা সমালোচনা সারজিসের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৫ মার্চ ২০২৫, ২৩:২৭আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫, ২৩:৫৬

সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুটির জানাজায় অংশ নিতে মাগুরা যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন নেতা। মাগুরায় পুলিশের হেলিকপ্টার থেকে তাদের নেমে আসার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা শুরু করেন।

জবাবে সারজিস আলম বলেন, ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাজমেন্টের বড় বড় অ্যানালাইসিস কপচানো যায়। কিন্তু যাদের আপনারা সুযোগ পেলেই নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করেন, যেকোনও ফরমেটে, যেকোনও সীমাবদ্ধতা নিয়েই হোক না কেন; দিনশেষে তারাই মাঠে দৌড়ায়।

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ নিয়ে একটি পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে সারজিস আলম বলেন, চলেন সোজাসাপ্টা কিছু আলাপ করি। ওই যে যেটা নিয়ে আপনারা আলাপ করছেন, সেই ফুটেজ নিয়ে। নৃশংস একটা ঘটনা ঘটলো। আমি আমার জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে জানালাম দ্রুত আসামি গ্রেফতার করার কথা। আবার- হাইকোর্ট থেকে ঘোষণা আসলো ১৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে দায়িত্বশীল একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আমার মতামত জানালাম। ১৮০ দিন অনেক বেশি হয়ে যায়। এটা ১-২ মাসের মধ্যে করা উচিত। না হলে মানুষের মাথা থেকে ঘটনাটা অনেকটাই মুছে যায় এবং সেই অপরাধের শাস্তি আদতে সমাজে অপরাধ দমনে তেমন প্রভাব রাখতে পারে না।

তিনি বলেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে আমি একাই জানিয়েছি কিংবা আমার জানানোর জন্যই গ্রেফতার হয়েছে বা আইন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার জায়গা থেকে মনে হয়েছে এটা আমার করা উচিত তাই আমি করেছি। তবে সে বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলো। আমিও ঢাকা মেডিক্যালে গেলাম। যখন জানলাম আইসিইউতে আছে তখন আর আইসিইউতে দেখতে যাইনি। কারণ বাইরে থেকে আইসিইউতে দেখতে গেলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। মেডিক্যালের বাইরে থেকে খোঁজ-খবর নিয়ে চলে এসেছি। ছবি পোস্ট করিনি।

“শিশুটিকে যখন জরুরি অবস্থায় সিএমএইচ-এ নেওয়া হলো তখন সেদিনই সন্ধ্যায় নাগরিক পার্টির কয়েকজনসহ সেখানে গিয়েছি উল্লেখ করে তিনি জানান, সেখানেও আইসিইউতে ছিল। দেখতে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল বলে সিএমএইচের সামনে থেকে ডিউটিরত ডাক্তারের সাথে কথা বলে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়ে বাসায় ফিরেছি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি। এরপর আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের থেকে খোঁজ নিয়েছি। এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেসবুকে দেওয়া অংশটুকুকে সামগ্রিক মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট (বিচার) করা শুরু করলো।”

সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট সারজিস আলম আরও বলেন, যখন শুনলাম আছিয়া আর নেই, তখন সিএমএইচে ছুটে গিয়েছি। সেনাবাহিনী, র‍্যাব থেকে (আছিয়ার) পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত হেলিকপ্টারে যখনই একাধিক সিট খালি থাকার কথা শুনেছি, তখনই মাগুরায় গিয়ে আছিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি এবং জানাজা পড়ে আবার ঢাকায় ব্যাক করেছি। এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেইসবুকে দেওয়া অংশটুকুকে 'সামগ্রিক' মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট করা শুরু করলো।

“তার মানে আমরা যতটুকু সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশ করি, ততটুকুই হচ্ছে বলে আপনারা মনে করেন এবং সেটাকে পুরো ঘটনা ধরে জাজমেন্ট শুরু করেন। অর্থাৎ, আপনারাও আসলে ফুটেজের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। আবার যদি কোনও কিছু না দেই, তখন মনে করেন কিছুই করা হয়নি! কি অদ্ভুত!”

ফেসবুকে ছবি বা পোস্ট দেওয়া নিয়ে সারজিস আলম আরও বলেন, দিলে বলেন ফুটেজমুখী, আর না দিলে বলেন কিছুই করেনি। আপনাদের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কবে একটা সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে পরিণত হবে?

তিনি বলেন, আবার আরেকটা ঘটনা লক্ষ্য করেন। আছিয়ার জানাজা ছিল সন্ধ্যা ৭টায়। আমরা পৌঁছেছি সাড়ে ৫টায়। এই দেড় ঘণ্টা একটা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করেছি। তার মধ্যে কয়েক মিনিট হয়তো ফোনের নোটিফিকেশন চেক করেছি। ঠিক ওই সময়ে কেউ ছবি তুললো এবং কালের কণ্ঠ একাধিক বারের মতো এবারও অপেশাদারত্বের পরিচয় দিয়ে তাদের অনলাইন পোস্টারে সেটা প্রকাশ করলো। পাশাপাশি এমনভাবে দেখালো যে আমরা মনে হয় পুরো সময় বসে শুধু ফোনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চাইলেই কিন্তু তারা ওখানে বসে থাকার অন্য সময়ের নরমাল কোনও ছবি ব্যবহার করতে পারতো। কিন্তু কিছু রিয়্যাকশন বেশি পাওয়ার আশায় সেটা তারা করেনি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এই নেতা আরও বলেন, আচ্ছা নিজের বিবেককে জিজ্ঞাসা করেন- দেড় ঘণ্টা কোথাও বসে থাকলে অন্তত কয়েক মিনিট আপনারা ফোনের নোটিফিকেশন চেক করতেন কিনা? যদি করেন তাহলে আপনাদের এই ভিউখোর মনোভাব বন্ধ হবে কবে? কবে পেশাদারত্বের পরিচয় দেওয়া শুরু করবেন? শোনেন, ঘরে বসে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাজমেন্টের বড় বড় অ্যানালাইসিস কপচানো যায়। কিন্তু যাদের আপনারা সুযোগ পেলেই নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করেন, যেকোনও ফরমেটে, যেকোনও সীমাবদ্ধতা নিয়েই হোক না কেন; দিনশেষে তারাই মাঠে দৌড়ায়।

সারজিস আলম আরও বলেন, এরপর থেকে অনলাইনে এসব অ্যানালাইসিস দেওয়ার আগে অফলাইনে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করে কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। আমরা আপনার ভালো কাজগুলো অনুসরণ করার অপেক্ষায় থাকবো।

/এমএস/
সম্পর্কিত
এনসিপির নিবন্ধন কবে সম্পন্ন হবে জানালেন সারজিস আলম
ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ বন্ধে হাইকোর্টের রুল
মানুষের চাওয়া-পাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই এনসিপি ইশতেহার ঘোষণা করবে: সারজিস আলম
সর্বশেষ খবর
সৎ মা ও দাদিকে হত্যার অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে
সৎ মা ও দাদিকে হত্যার অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে
লন্ডন সফর শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
লন্ডন সফর শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
বগুড়ায় এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে হত্যা
বগুড়ায় এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে হত্যা
ইরানের সর্বশেষ দফার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ১০ ইসরায়েলি আহত
ইরানের সর্বশেষ দফার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ১০ ইসরায়েলি আহত
সর্বাধিক পঠিত
জাহান্নামের দরজা খুলে যাবে: ইসরায়েলকে ইরানের নতুন আইআরজিসি প্রধানের হুঁশিয়ারি
জাহান্নামের দরজা খুলে যাবে: ইসরায়েলকে ইরানের নতুন আইআরজিসি প্রধানের হুঁশিয়ারি
অ্যালেনের ৩৪ বলের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড ওলটপালট
অ্যালেনের ৩৪ বলের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড ওলটপালট
আলাপের আগে যে আলাপ হলো ড. ইউনূস-তারেকের মাঝে
আলাপের আগে যে আলাপ হলো ড. ইউনূস-তারেকের মাঝে
ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে ইসরায়েলি হামলার বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে ইসরায়েলি হামলার বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
করোনায় দুই জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৫
করোনায় দুই জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৫