বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায় সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
সম্প্রতি ওই রায়ের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায় সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে আপিল বিভাগ। এর ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের পথ সুগম হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক ৪৫টি আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এ রায় দেন।
আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল যে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর কর আরোপ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার খরচ বৃদ্ধি করবে, তা সঠিক নয়। কারণ আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর কেবলমাত্র তখনই প্রদেয় হবে যখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আয় করবে; তবে ক্ষতি হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কর প্রদান করতে হয় না।
সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, প্রবীর নিয়োগী এবং আইনজীবী ওমর সাদাত ও সাখাওয়াত হোসেন।
বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে শতকরা ১৫ ভাগ হারে আয়কর আদায়ের জন্য ২০০৭ সালের ২৮ জুন ও ২০১০ সালের ১ জুলাই পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
পরে ওই দুই প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে পৃথক রিট করা হয়।
পরে ওই দুই প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও এক শিক্ষার্থীর করা পৃথক ৪০টির বেশি রিট করা হয়। এসব রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুটি প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন। এর ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক ৪৫টি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক ৪৫টি আপিল করে, যার ওপর শুনানি শেষে রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ।