কর্মদিবসে সড়ক দখল করে রাজনৈতিক কর্মসূচি না করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘সড়ক দুর্ঘটনা তদন্তে ডিএমপি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অনুরোধ জানান।
আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল রোড সেফটি পার্টনারশিপ (জিআরএসপি) আয়োজিত দুদিনের এ কর্মশালায় ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের ৬০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা রোড ক্র্যাশ বা সড়ক দুর্ঘটনার তদন্তে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কলাকৌশল ও বৈশ্বিক সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক জ্ঞান অর্জন করছেন, যা দেশের বাস্তবতায় প্রয়োগ করা সম্ভব।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সড়কে যান চলাচলের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা এবং মহানগরে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য আমরা বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের কর্মদিবসে সড়কে কোনো কর্মসূচি না রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। কারণ, এ ধরনের কর্মসূচি সব শ্রেণির মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব কর্মসূচির কারণে পুলিশ রোড ক্র্যাশ তদন্তে সময় দিতে পারে না। অথচ বৈজ্ঞানিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সড়কে প্রাণহানি কমানো সম্ভব।’
শেখ সাজ্জাত আলী জানান, বর্তমানে ট্রাফিক বিভাগ সড়কে দায়িত্ব পালন করে, আর দুর্ঘটনার তদন্ত করে ক্রাইম বিভাগ। ভবিষ্যতে ট্রাফিক বিভাগকেও এই তদন্তে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধে পথচারী ও চালকদের ট্রাফিক নিয়ম যথাযথভাবে মানা জরুরি। বিশেষ করে গতি সীমা লঙ্ঘন, হঠাৎ লেন পরিবর্তন ও যত্রতত্র রাস্তা পার হওয়া দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।’
তিনি জানান, ‘ঢাকা শহরে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত, যখন সড়ক অপেক্ষাকৃত ফাঁকা থাকে। তাই পুলিশ সদস্যদের এসব সময়ও কঠোরভাবে গতি নিয়ন্ত্রণসহ আইন প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) কো-অর্ডিনেটর ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সারওয়ার, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মাহবুব আলম, জিআরএসপি’র এশিয়া-প্যাসিফিক ম্যানেজার ব্র্যাট হারম্যান, সিনিয়র রোড পুলিশিং অ্যাডভাইজার পিটার জোনস, এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর গোলাম হোসেন, ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেটর রেজাউর রহমান, সার্ভেইল্যান্স কো-অর্ডিনেটর ডা. তানভীর ইবনে আলী, এবং ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর আমিনুল ইসলাম সুজন।