বিএনপি নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর জামিন বাতিল ও কারাগারে নেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন দলের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (২০ মে) রাজধানীতে ইশরাকের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। পাশাপাশি ইশরাক হোসেন ও আবু আশফাকের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রসঙ্গত, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে রবিবার (২০ মে) পল্টন থানার একটি মামলায় জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এবং দোহার উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মেসের ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজকে প্রথমে জামিন প্রদান এবং পরে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘‘৭ জানুয়ারির ‘আওয়ামী ডামি সরকার’ নব্য বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম, অত্যাচার অব্যাহত রেখেছে। সেটিরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এবং দোহার উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মেসের ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানো হলো।’
তিনি বলেন, ‘আইনের শাসনহীন এই দেশে নিরপরাধ মানুষরাই সরকারি নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর কতৃর্ত্ববাদী আওয়ামী সরকার তাদের দুঃশাসন চালাতে আরও বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। তবে এই শাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে সংগ্রামী জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
এদিকে গ্রেফতারকৃত নেতাদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অনিয়ম, অপচয়, দুর্নীতি আর মূল্যবৃদ্ধির এই ভয়াবহ প্রকোপের মধ্যে জনজীবনে যে হতাশা, অশান্তি ও নৈরাজ্য নেমে এসেছে— সেটিকে কার্পেটের নিচে ঢেকে রাখতে চান শেখ হাসিনা। সেজন্য জুলুমের মাত্রাকে তিনি তীব্র করেছেন বিক্ষোভ ও প্রতিবাদকে স্তব্ধ করার জন্য।’
রিজভী বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ যেন এমনই ‘ওয়াশিং মেশিন’ যে, এর ভেতর দিয়ে ঢুকলে লুটেরা, হরিলুটকারী, টাকা পাচারকারী, মহাদুর্নীতিবাজরা সাফসুতরো হয়ে যায়। শীর্ষ ব্যবসায়ী কোনও অনুমতি না নিয়ে বিদেশে অর্থ সরিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে। নিয়ম-নীতি না মেনে ক্ষমতার ঘনিষ্ঠের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা। ঋণখেলাপির পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে, দেশের আর্থিক খাত এখন শূন্যের মধ্যে ঝুলছে। যেকোনও সময় এর ভয়ংকর ক্র্যাশল্যান্ডিং হতে পারে।’
এছাড়া, সোমবার বিকালে রাজধানীর গোপীবাগে ইশরাক হোসেনের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটি নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে টিকাটুলি মোড়ে এসে শেষ হয়।