আগামী এক অর্থবছরে কীভাবে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব, এমন প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, তিনি কীভাবে আগামী ১২ মাসে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে আনবেন? অর্থমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিচ্ছি, এক কেজি কাঁচা মরিচ এখন ৩২০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন ডিমের দাম ১৬৫ টাকা।’
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকালে রাজধানীর মালিবাগে এনডিএমর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘ভারতের সাথে হওয়া চুক্তির প্রতিবাদে এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানানো হয়।
রাজধানীর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক উল্লেখ করেন, ‘সমস্যাকে অস্বীকার করে অবাস্তব গল্প শোনানোর নামই আওয়ামী লীগ সরকার।’
লিখিত বক্তব্যে হাজ্জাজ বলেন, ‘সংবিধানের ১০২ (১) নম্বর অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে আমরা বাংলাদেশের অর্থবছরের সময় পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। কারণ জুন মাসে বর্ষাকাল হওয়ায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল পানিতে ডুবে যায়। প্রায় প্রতি বছরই বন্যা হয়, যা এ বছরও অব্যাহত আছে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্পে বিগত অর্থবছরের শেষ দিকের অর্থ এবং সমাগত বছরের নতুন অর্থ বরাদ্দ এবং ব্যয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।’
তিনি জানান, ব্রিটিশ আমলের আদলে অনুসৃত জুলাই-জুন অর্থবছর কিন্তু এখন ব্রিটেনেও পরিবর্তিত হয়ে এপ্রিল মাসে শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী আমাদের অর্থবছর যদি এপ্রিল-মার্চে (বৈশাখ-চৈত্র) হয়, তাহলে বৃষ্টি শুরুর আগেই চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করা সম্ভব হবে, যা সরকারি ব্যয় সাশ্রয় করবে এবং জনগণকে ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা করবে।’
ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘বাজেটের মোট আকারের ১৭ শতাংশ অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নিয়ে মেটানো হবে, যা দেশের বেসরকারি বিনিয়োগ খাতকে পঙ্গু করে তুলবে। কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ বারবার দেওয়া হচ্ছে, তার কী পরিমাণ সুফল এ পর্যন্ত আমরা পেয়েছি সেটা জানতে চাই। এর চেয়ে বড় প্রশ্ন, টাকা কেন কালো হলো?’
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে প্রথম সারিতে থাকা সিনিয়র সাংবাদিকরা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যর্থ উল্লেখ করে এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, ‘এসব সাংবাদিক নামধারী কতিপয় সুবিধাবাদী মিডিয়া মুঘল ভাইদের সামাজিকভাবে বয়কটের জন্য আমরা জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় রেল চলাচল বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কাছে প্রশ্ন রেখে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের ভূ-খণ্ড ব্যবহারের অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলেই কি আপনারা ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন?’
হাজ্জাজ যোগ করেন, ‘২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর হেফাজতে ইসলামের ভাইদের রক্তে রঞ্জিত করেই সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ সম্পদের পাহাড় গড়া শুরু করেছিলেন। এর চূড়ান্ত সফলতা এসেছিল ২০১৮ সালে নিশিরাতের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে।’