ঋষাভ পান্ত দেরিতে হলেও নিজেকে ফিরে পেলেন। কিন্তু তার দর্শনীয় পারফরম্যান্স বিফলে গেলো। শীর্ষ দুইয়ে থেকে প্রথম কোয়ালিফায়ারে যেতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সামনে জয়ের বিকল্প ছিল না। এমন ম্যাচেই পুরো টুর্নামেন্টে আঁধারে থাকা পান্ত জ্বলে উঠলেন। তাতে ২২৭ রানের মতো বড় ইনিংস গড়ে লখনউ সুপার জায়ান্টস। তার ঝড়ো সেঞ্চুরি ছাপিয়ে বেঙ্গালুরু অধিনায়ক জিতেশ শর্মা হয়েছেন নায়ক। বিরাট কোহলির হাফ সেঞ্চুরির পর ক্যাপ্টেন্স নকে জিতে গেছে তারা। ৮ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয়ে পাঞ্জাব কিংসের সঙ্গে প্রথম কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করলো বেঙ্গালুরু।
টস জিতে বোলিং নিয়ে শুরুটা ভালো হয়েছিল বেঙ্গালুরুর। মৌসুমের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে নুয়ান থুসারা ১৪ রানে ফেরান ব্রিজকেকে। লখনউ তারপর পাল্টা জবাব দেয় পান্ত ও মিচেল মার্শের ব্যাটে। অধিনায়কের আগুন ঝরানো ব্যাটিংয়ের শুরু হয় যশ দয়ালের ওভারে ১৮ রান নিয়ে। ২০ বলে পান্ত করেন হাফ সেঞ্চুরি, তাতে দশম ওভার শেষে স্কোর ১ উইকেট ১০০।
মার্শ চলমান মৌসুমের নিজের সপ্তম ফিফটি ছাড়ানো ইনিংসে খেলেন। তাকে ৩৭ বলে ৬৭ রানে থামিয়ে ১৫২ রানের জুটি ভাঙেন ভুবনেশ্বর কুমার। ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে বেঙ্গালুরুর এই পেসারকে চার মেরে ৫৪ বলে সেঞ্চুরি করেন পান্ত। ২০১৮ সালের পর এটি প্রথম ও আইপিল ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় শতরান তার। প্রথম ১৩ ইনিংসে ১৫১ রান করেছিলেন পান্ত, এদিন করলেন ৬১ বলে ১১ চার ও ৮ ছয়ে ১১৮ রান। লখনউর হয়ে এটি ছিল যে কোনও ক্রিকেটারের দ্রুততম সেঞ্চুরি।
বড় লক্ষ্যে নেমে বেঙ্গালুরু শুরু থেকে রানের গতি বাড়ায়। দ্বিতীয় ওভারে উইলিয়াম ও'রোর্কের বলে কোহলির চারটি ও ফিল সল্টের এক চারে ২২ রান তোলে তার। এই জুটি ৫.৪ ওভারে ৬১ রান করে বিচ্ছিন্ন হয়। সল্ট ৩০ রান করে থামেন।
ও'রোর্কে অষ্টম ওভারে ফের বল হাতে নিলে রজত পতিদারের কাছে ছয় ও কোহলির কাছে চার হজম করেন। তারপর শেষ দুই বলে পতিদার ও লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফেরান তিনি।
দশম ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ২৭ বলে ফিফটি করেন কোহলি। ওই ওভারে আকাশ শিংকে টানা তিন চার মারেন মায়াঙ্ক। আসে ১৮ রান। ১২তম ওভারে আবেশ খান কোহলির ৫৪ রানের ইনিংস থামিয়ে স্বস্তিতে ফেরান লখনউকে।
ম্যাচ তখন দুই দলের দিকে ঝুকে পড়ে। তবে জিতেশ নেমে প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন, যা মাঝেমধ্যে চলেছে লক্ষ্য পূরণ করা পর্যন্ত।
কোহলি আউট হওয়ার পর জিতেশ ও মায়াঙ্ক শক্ত হাতে হাল ধরেন। ১৪ ও ১৫তম ওভারে ১৭ ও ২১ রান তুলে রিকুয়ার্ড রেট ১০ এর ঘরে নেন তারা। আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে ফিফটি করেন জিতেশ। পরের ওভারে ও'রোর্কেকে দুটি করে চার, ছয় মেরে ২১ রান তোলেন তিনি। ১৯তম ওভারে আয়ুশ বাদোনিকে ছয় হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নেন তিনি। তাতে ১৮.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩০ রান করে বেঙ্গালুরু।
জিতেশ ৩৩ বলে ৮ চার ও ছয় ছয়ে ৮৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার সঙ্গে ১০৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৪১ রান করে অবদান রাখেন মায়াঙ্ক।
ম্যাচসেরা হয়েছেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক।
আগামী ২৯ মে প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলবে পাঞ্জাব ও বেঙ্গালুরু। পরের দিন এলিমিনেটরে মুখোমুখি হবে গুজরাট টাইটান্স ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।