X
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘প্রবাসী বড় বিষয় নয়, যাকে যেখানে দরকার সেখানে খেলানো হয়েছে’

তানজীম আহমেদ
২০ মে ২০২৫, ১১:০৬আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ১৩:০৬

ভারতের অরুনাচল প্রদেশে অল্পের জন্য সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবলের শিরোপা জেতা হয়নি বাংলাদেশের। ফাইনালে লড়াই করেও টাইব্রেকারে স্বাগতিক ভারতের কাছে হারতে হয়েছে। তবে মাঠ ভর্তি দর্শকের সামনে লাল-সবুজ দলের লড়াকু পারফরম্যান্স সবার মন জয় করে নিয়েছে। যদিও ভাগ্য পরীক্ষায় জিততে পারেনি মুর্শেদরা। কলকাতা থেকে মঙ্গলবার বিকালে দেশে ফিরছে পুরো দল। তার আগে সেখান থেকে দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন এমন আশাজাগানিয়া, টুর্নামেন্ট নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানে নিজ দলের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি প্রবাসী ফুটবলারের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে।

ফাইনাল নিয়ে কথা...

অরুনাচলের গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে অনেক দিন পর ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়েছে। সেখানে তাই ফাইনালে গ্যালারি ভর্তি দর্শক ছিল। আমাদের ছেলেরা শুরুতে গোল খেয়ে হতোদ্যম হয়নি। লড়াকু পারফরম্যান্স করে গেছে। মাঠে প্রতিকূল দর্শকদের চিৎকারও তাদের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ক্রসবারে লাগায় গোল হয়নি। একপর্যায়ে সমতায় ফিরে এসে জেতার মতো দাপটও দেখালাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।  টাইব্রেকারে তো আমরা সফল হতে পারেনি। ভাগ্য সহায় ছিল না। বিশ্বের বড় বড় তারকা ফুটবলাররাও অনেক সময় টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হয়। আমাদের ছেলেরা চেষ্টা করেছে, কিন্তু হয়নি। ওদের বয়স কম। আসলে দিনটি আমাদের ছিল না। না হলে তো আমরা ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারতাম।

ছেলেদের পারফরম্যান্স নিয়ে...

আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট বলতে পারেন। প্রস্তুতি তো বেশি দিনের নয়। দুই সপ্তাহ ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারিনি। তার ওপর দুজন খেলোয়াড়কে পাইনি। সেখানে ভারত ইন্দোনেশিয়া থেকে খেলে এসেছে। আর আমরা নিজেদের মধ্যে খেলে অরুনাচল এসেছিলাম। তাদের ম্যাচ টেম্পারমেন্ট তো আমাদের থেকে বেশি ছিল বলা চলে। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে সেই ব্যবধানটা বুঝতে দেইনি। সবাই নিজেদের সাধ্যমতো লড়াই করেছে। ভাগ্য সঙ্গে না থাকায় শিরোপা জেতা হয়নি। ট্রফি জিততে পারলে অনেক ভালো লাগতো। এছাড়া আমার আরও একটি উপলব্ধি হলো এটা সাম্প্রতিক সময়ে বয়সভিত্তিক দলের সেরা পারফরম্যান্স বলবো আমি। বিশেষ করে যেভাবে ওরা ফাইনালে লড়াই করেছে এতো দর্শকের সামনে। শুরুতে গোল হজম করে ঘুড়ে দাঁড়ানো... সবকিছুই খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব।
 
ম্যাচে শিষ্যদের নির্দেশনা নিয়ে..

ও..আচ্ছা আপনারা ইউটিউবে শুনতে পেয়েছেন। আসলে ম্যাচে অনেক সময় অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। যা করার দরকার তাই করেছি। এটা ম্যাচের অংশ বলতে পারেন। প্রতিনিয়ত নির্দেশনা যেমন এটা করো..ওর পায়ে বল দাও..সবকিছুই ম্যাচের স্বার্থে। তবে হ্যাঁ, প্রতিটি ম্যাচে এমনটি করার প্রয়োজন হয়নি।
ডাগ আউটে থেকে যখন যা প্রয়োজন তাই করেছি। সবসময় যে ওদের নির্দেশনা দিয়েছি তা নয়। ওদেরকে ওদের মতো খেলতে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচে সবসময় নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করিনি।

ডাগ আউটে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন (মাঝে)। লং বলে খেলা নিয়ে..

আমার মনে হয় একেকজনের একেক ধরণের স্টাইল রয়েছে। প্রতিপক্ষ বুঝে ম্যাচের কৌশল ঠিক হয়ে থাকে। ওই সময় মনে করেছি লং বলে খেলতে পারলো ভালো। তাই হয়তো চিৎকার করে নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তা আপনারা শুনেছেন। লং বলে অনেক সময় প্রতিপক্ষ ভড়কে যেতে পারে। সেখান থেকে খেলতে বলা। আর আমার দলের পারফরম্যান্স কেমন ছিল তা সবাই দেখেছে। টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হেরে যাওয়া আসলেই দুর্ভাগ্যজনক।

মেয়েদের পর ছেলেদের দল নিয়ে ফাইনালে..

মেয়েরা তো সারাবছর অনুশীলন করে থাকে। ওদের সঙ্গে ছেলেদের মেলানোটা ঠিক হবে না। আমরা তো ছেলেদের নিয়ে সময় কম পেয়েছি। এতো অল্প সময়ে ওরা যেভাবে ফাইনালে গেছে। ফাইনালে এতো দর্শকের মাঝে লড়াই করেছে। শুরুতে পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফিরেছে। টাইব্রেকারে ভাগ্যের কাছে হেরেছে। এটা আসলেই অন্যরকম দিক বলতে পারেন। আমাদের মেয়েরা শুধু নয়, ছেলেরাও যে শীর্ষে যেতে পারে তা প্রমাণ হয়েছে। তবে ছেলেদের নিয়ে এই পর্যন্ত আসাটা নতুন অভিজ্ঞতা হলো।

দুই প্রবাসী ফুটবলারের গেম টাইমিং নিয়ে..

দেখুন আমি যখন ২৩ জনের স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছি, তখন থেকেই আমার কাছে সবাই সমান। কে স্থানীয় আর কে প্রবাস থেকে এসেছে দেখিনি। আমার কাছে দেশ আগে, দেশের স্বার্থ আগে। তাই ম্যাচের প্রয়োজনে যখন যাকে দরকার তাকে মাঠে নামিয়েছি। মাঠে নামানোর সময় স্থানীয় কিংবা প্রবাসী ফুটবলার দেখিনি।আমার কাছে পারফরম্যান্সই হলো মুখ্য কথা। এখানে কাউকে ছোট করে দেখা হয়নি। প্রবাসী খেলোয়াড় বড় বিষয় নয়, যাকে যেখানে দরকার সেখানে খেলানো হয়েছে। মাঠে খেলতে না পারলে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার কিছু নেই। এখানে  স্থানীয় ও প্রবাসী ফুটলারের মধ্যে যেসব ‘সিন্ডিকেটের’ কথা বলা হয় তা ঠিক নয়। কোচের বেলাতেও তাই। সামনে অনেক সুযোগ আসবে। সবার জন্য বিষয়টি প্রযোজ্য।

দল নিয়ে শেষ কথা..

আমার উবলব্ধি বয়সভিত্তিক দল নিয়ে সারা বছর চর্চার মধ্যে রাখতে হবে। শুধু অনুশীলন করলেই হবে না। দেশের বাইরে প্রীতি ম্যাচ খেলার সুযোগ দিতে হবে। যেন তাদের ম্যাচ টেম্পারমেন্ট বাড়ে। সামনের দিকে যে কোনও  টুর্নামেন্ট খেলতে গেলে যেন আমরা সেই জায়গাতে পিছিয়ে না পড়ি।

/এফআইআর/
সম্পর্কিত
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষেই অভিষেক হচ্ছে শমিত সোমের!
দুই প্রবাসী ফুটবলার নিয়ে ভারতে শিরোপা স্বপ্ন বাংলাদেশের
বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়েছেন শামিত
সর্বশেষ খবর
আইনশৃঙ্খলা ঠিকমতো না চললে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরিব মানুষ
বরিশালে পরিকল্পনা উপদেষ্টাআইনশৃঙ্খলা ঠিকমতো না চললে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরিব মানুষ
স্টারলিংকে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ নেই: বিশেষ সহকারী
স্টারলিংকে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ নেই: বিশেষ সহকারী
গুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক প্রশ্ন সম্পর্কিত মামলার শুনানি সরাসরি সম্প্রচার প্রশ্নে রুল
গুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক প্রশ্ন সম্পর্কিত মামলার শুনানি সরাসরি সম্প্রচার প্রশ্নে রুল
রাজধানীর কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি, কমেছে তাপমাত্রা
রাজধানীর কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি, কমেছে তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
ক্ষমা চাইলেন ইশরাক
ক্ষমা চাইলেন ইশরাক
বিনা টিকিটে বিমানে ওঠার চেষ্টা, শাহজালালে তোলপাড়
বিনা টিকিটে বিমানে ওঠার চেষ্টা, শাহজালালে তোলপাড়
টিসিবির ডিলার নিয়োগের নীতিমালা চূড়ান্ত
টিসিবির ডিলার নিয়োগের নীতিমালা চূড়ান্ত
‘হাসনাত আবদুল্লাহ বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কুমিল্লায় আসতে দেওয়া হবে না’
‘হাসনাত আবদুল্লাহ বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে কুমিল্লায় আসতে দেওয়া হবে না’
সরকারি হাসপাতাল পরিচ্ছন্নের কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার পরিকল্পনা 
সরকারি হাসপাতাল পরিচ্ছন্নের কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার পরিকল্পনা