ইংল্যান্ডের ৩১০ রান পেছনে থেকে ২৭৩ রানে শেষ হলো পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস। কিন্তু পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলী তবু তার ব্যাটখানা উঁচিয়ে মাঠ ছেড়ে গেলেন। মুখে একটু হাসিও ছিল। আজহার এমনটা করতেই পারেন। কারণ ইংল্যান্ডের বোলিংয়ের সামনে একাই বুক চিতিয়ে লড়াই করে গেছেন, ক্যারিয়ারের ১৭তম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে হার মানেননি। ছয় হাজার টেস্ট রানের মাইলফলক পেরিয়ে দিনের শেষে অপরাজিত ১৪১ রানে। উইকেটে ভালো সঙ্গ পেলে ফলো-অন এড়ানো যেতো কি যেতো না আলাদা কথা, তবে লড়াইটা নিশ্চয়ই করতেন।
ড্রেসিংরুমে গিয়ে প্যাড খোলারও সময় পাননি আজহার। আবার নেমে পড়তে হয়েছে তাকে। কারণ ইংল্যান্ড ফলো-অনে ফেলেছে। আগের ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিন নম্বরে। এবার শন মাসুদের সঙ্গে নেমে পড়েন ইনিংসের গোড়াপত্তন করতেই। খেলা হতে পারতো ছয়-সাত ওভার। কিন্তু মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর একটি বলও পড়তে দেয়নি পিচে।
যেমনটা বলা হয়, যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই সোমবার চতুর্থদিনের খেলা শুরু করবেন আজহার। দেখা যাক ইংলিশ বোলাররা কখন তাকে আউট করতে পারে। দ্বিতীয় দিনের শেষে মাঠে নামা পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যানকে তৃতীয়দিনেও কেউ আউট করতে পারেননি। তার ঘাতক কি হবেন জেমস অ্যান্ডারসন? সেটি হলে খুব মানাবে। কারণ ৩৮ বছর বয়সী ইংলিশ পেসার তার ছয়শো টেস্ট উইকেট থেকে মাত্র দুই উইকেট দূরে আছেন। আগের দিনের তিন উইকেটের সঙ্গে রবিবার নিয়েছেন আরও দুই উইকেট- ক্যারিয়ারে ২৯তম বারের মতো পাঁচ উইকেট শিকার।
তিন উইকেটে ২৪ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা পাকিস্তান চতুর্থদিন আর মাত্র ৬ রান যোগ করেই হারায় চতুর্থ উইকেট। অ্যান্ডারসনের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আসাদ শফিক। পঞ্চম উইকেটে একটু ফাওয়াদ আলমকে নিয়ে একটু প্রতিরোধ গড়েন আজহার আলী, আসলে প্রতিরোধ গড়তে চেয়েছিলেন আরকি! ফাওয়াদ যে তার অধিনায়কের সঙ্গে ৪৫ রানের বড় জুটি গড়তে পারেননি। এখান থেকে ভাবা যায়নি যে পাকিস্তানের ইনিংস দেড়শো পেরোবে। কিন্তু আড়াইশোও পেরিয়ে গেল আজহারের সঙ্গে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান ‘প্রতিরোধ যুদ্ধে’ শামিল হওয়ায়। ১৩৮ রানের জুটি গড়েন তারা ষষ্ঠ উইকেটে। এর মধ্যে ১৭তম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আজহার, রিজওয়ান তার তৃতীয় টেস্ট ফিফটি। কিন্তু ক্রিস ওয়াকসের বলে রিজওয়ান ক্যাচ হয়ে ফেরার পর আজহার তেমন সঙ্গ পাননি। তবু টেল-এন্ডারদের আড়াল করে ব্যাট চালিয়ে থেকে গেছেন অপরাজিত।
শুরুর মতো শেষ উইকেটটাও তুলেছেন অ্যান্ডারসন, নাসিম শাহ স্লিপে ক্যাচ হয়েছেন ডম সিবলির হাতে। পাকিস্তান অলআউট ২৭৩ রানে। আর দুটি উইকেট তুলে ছয়শো পূরণ করার সুযোগ এসে গিয়েছিল ইংলিশ পেসারের সামনে। শেষবেলায় বাদ সেধেছে প্রকৃতি, একটি বলও আর পড়তে দেয়নি পিচে। তাতে কি, দুটি দিন পড়ে আছে সামনে! ছয়শো উইকেটের সঙ্গে এই টেস্টটাও হয়তো দলকে জেতাতে চলেছেন ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটশিকারী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৮৩/৮ ডিক্লে.
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৭৩ (আজহার অপ. ১৪১, রিজওয়ান ৫৩, ফাওয়াদ ২১, ইয়াসির ২০, অ্যান্ডারসন ৫/৫৬, ব্রড ২/৪০)