খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট্ট একটি অপারেশন হয়েছে। তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা দেখলেন উনার একটা বায়োপসি করা দরকার। ছোট একটা লাম্প আছে এক জায়গায়। যেহেতু লাম্প আছে, তার ন্যাচার অব ভিউ জানার জন্য বায়োপসি করা হয়েছে। অপারেশনের পরে বেগম জিয়া সুস্থ আছেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। এখন তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বিপদমুক্ত।’
সোমবার (২৫ অক্টোবর) বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাহিদ এসব কথা জানান।
অপারেশনের পর ফলাফল পেতে কেমন সময় লাগতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে। এ ধরনের অপারেশনের পর কখনও ১৫ থেকে ২১ দিনও সময় লাগে। আমেরিকার মতো জায়গায়ও এমন হয়। ফলে, আজকেই বলা যাবে না—ন্যাচার অর অরিজিন কী।’
জাহিদ হোসেন জানান, ‘অপারেশনের পর বেগম জিয়ার ভাইটাল প্যারামিটারগুলো স্ট্যাবল আছে। এখন তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। বায়োপসি ডায়গনোস্টিক পার্ট, পরের চিকিৎসা কী হবে, সেটা ঠিক হবে পরে।’
এসময় ডা. জাহিদ হোসেন যোগ করেন, ‘ডেডিকেটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং দেশের বাইরে চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়, সবাই যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন।’
বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন: ফখরুল
এসময় মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার বিষয়ে তার মেডিক্যাল বোর্ড পরামর্শ দিয়েছেন’। তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম বিপদমুক্ত। যতগুলো পুরনো ডিজিজ তার আছে, এজন্য তার মাল্টি অ্যাডভান্স সেন্টারে চিকিৎসা প্রয়োজন। আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতে এই ব্যবস্থা নেই। এটা আমরা বারবার বলে আসছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার মুক্তিতে আইনগত বাধা আছে বলে মনে করি না। কেন তিনি জামিন পাবেন না? জামিন তার প্রাপ্য, এটা অধিকার, দয়া নয়। জামিন পাওয়াটা তার অধিকার। অবিলম্বে তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া দরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. আল মামুন, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে বেগম জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রমে যুক্ত একাধিক দায়িত্বশীল জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক প্যারামিটারগুলো আপ-ডাউন করছে। বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন। সোমবার মেডিক্যাল বোর্ড তার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন।
গত মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বিকালে শারীরিক অবস্থার ফলোআপ করাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরদিন থেকে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়।