কী অবস্থা নয়াপল্টনের?

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল বুধবার বিকাল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষ চলে রাত পর্যন্ত। এতে একজন নিহতসহ বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়। এছাড়া ৫০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সংঘর্ষের পর থেকে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকাল পর্যন্ত কাকরাইল মোড় থেকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল যাতায়াতের পুরো রাস্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রতিটি মোড়ে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ব্যারিকেড, জলযান, অস্ত্র-সরঞ্জামসহ অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

দুপুর ১২টার দিকে কাকরাইল মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় তাদের স্লোগান দিতে শোনা যায়।318654196_627302672506355_8785658810356937111_n

বিএনপির কার্যালয়ের দিকে অথবা এ রাস্তায় কাউকেই চলাচল করতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাংবাদিক কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে আগত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ প্রয়োজনে যাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে তাদের আইডি কার্ড কিংবা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে।

সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে নয়াপল্টনে দায়িত্বরত পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার গোলাম রুহানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ আমরা এখানে অবস্থান করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্দেশ থাকবে ততক্ষণ আমরা এখানে অবস্থান করবো।

তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে অবস্থান করছি। গতকালের সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত শান্ত রয়েছে।

এদিকে দুপুর ১টা থেকে পল্টন মডেল থানার সামনে শত শত আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এসময় পল্টন মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক হিরণ্ময় বারুরীকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায়। আজকের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ব্যস্ততার কথা বলে এড়িয়ে যান তিনি।

এদিকে বেলা ২টার দিকে সিআইডির একটি টিম বিএনপির পার্টি অফিসের সামনে উপস্থিত হয়। সেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য পার্টি অফিসের সামনের পুরো দুর্ঘটনাস্থল ‘ক্রাইম সিন, ডু নট ক্রস’ লেখা হলুদ ফিতা দিয়ে শনাক্ত করে গতকাল উদ্ধার করা বিস্ফোরকসহ আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

এছাড়া বেলা আড়াইটার দিকে গ্রেফতার হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে দুইটি প্রিজনভ্যানে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এসময় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।

অন্যদিকে সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যদের সরেজমিনে দেখতে বিকাল ৩টায় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে গেলেও দায়িত্বরত কর্মকর্তারা তথ্য দিতে রাজি হননি। রফিকুল নবী নামে একজন পুলিশ সদস্য তথ্যের জন্য হাসপাতালের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিশেষ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আহত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে বিএনপির ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে উত্তাপ বিরাজ করে। সমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা চলাকালে গতকাল পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

আরও পড়ুন: