X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাকালে ধর্মীয় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম
০২ মে ২০২০, ১৪:৫২আপডেট : ০২ মে ২০২০, ১৪:৫৭

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউন পত্রিকায় গত ২৩ এপ্রিল ২০২০ ‘করোনায় মারা যাওয়াদের সৎকারের ভার ‘হুজিনেতা’ মুফতি শহীদের এনজিওর হাতে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। নিঃসন্দেহে প্রতিবেদনটি অনুসন্ধানমূলক। আসলে করোনা সংকটের এই কালে মানুষের জীবন নিয়ে আতঙ্ক হতাশার মধ্যেই প্রতিনিয়তই পত্রিকায় কিংবা টেলিভিশনে চোখ রাখছে আজ নতুন করে কতজন আক্রান্ত হলো, কতজন মারা গেলো তা দেখার জন্য; কোনও দেশে করোনার ওষুধ কিংবা টিকা আবিষ্কার হয়েছে কিনা জানার জন্য! বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসীরা আমেরিকায় কতজন মারা গেলো কিংবা সরকার কী করছে! সমাজ পরিবেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এতবেশি ভয় শঙ্কার মধ্যে মানুষের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। 
আমি অপরাধবিজ্ঞানের শিক্ষক ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে গবেষণা-লেখালেখি করি বলে সংবাদটি আমার কাছে দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, সাধারণভাবে করোনাকালে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিশ্বব্যাপী কোনও প্রভাব আছে কিনা তা বোঝার জন্য। দ্বিতীয়ত, আমি লক্ষ করেছি সংবাদটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকদের অনেকেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। প্রতিবেদককে ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে শুরু করে গালাগালি পর্যন্ত করেছেন। প্রশ্ন জাগে এর কারণ কী? আমার কাছে মনে হয়েছে, করোনা মহামারির এই অভূতপূর্ব সংকটের কালে দুয়েকটি বাদে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা যখন মাঝে মাঝেই আমাদের চোখে প্রায়ই ধরা পড়ছে, সেই সময়ে মৃত মানুষের লাশ দাফনের ব্যাপার কিংবা বলতে পারি স্বাস্থ্য সহযোগিতা ও ত্রাণ বিতরণের মতো মানবিক ব্যাপারগুলোকে সাধারণ মানুষ খোলা চোখে ইতিবাচকভাবেই দেখার কথা! সংবাদের প্রতিক্রিয়া অন্তত তাই বলে।

আমি মনে করি ব্যাপারটি এত সহজ নয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান, নিউইয়র্ক টাইমস, লসএঞ্জেলস টাইমস, ফোর্বস থেকে শুরু করে পৃথিবীব্যাপী একাডেমিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সোসাইটিগুলো করোনাকালে ধর্মীয় জঙ্গিবাদ, চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ওয়াকিবহাল। তারা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা, লেখালেখি ও গবেষণা করছেন। এমনকি মিয়া ব্লুমের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞও এই বিষয়ে নিয়মিত কমেন্টারি লিখছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার হয়তো তা নিয়ে সচেতন নয়। অথবা সচেতন থাকলেও তা কার্যক্রমে প্রকাশ হয়নি। বাস্তবে সমগ্র বাংলাদেশে সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যরা এখনও ত্রাণ, বাজার নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং মৃত ব্যক্তির সৎকার নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলেই হয়তো তা আলোচিত নয়।

আসলে পৃথিবীব্যাপী লকডাউন, আইসোলেশন ও সামাজিক দূরত্বের কালে আইনশৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও অপরাধ নিয়ে পুলিশি নজরদারি কম থাকার সুযোগে ধর্মীয় জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সংঘবদ্ধ গ্যাং-মাফিয়া চক্র আরও নতুনভাবে কাজ করার সুযোগ পায়। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা করোনার সময়ে পৃথিবীব্যাপী জঙ্গিবাদ সংগঠনগুলোর বিভিন্ন ধরনের তৎপরতাকে চিহ্নিত করছেন। যার মধ্যে দুয়েকটি বাদে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রায় সবই ক্রিয়াশীল আছে বলে মনে করি।

প্রথমত, করোনার এই সময়কে জঙ্গি সংগঠনগুলো মূলত ‘ভাবাদর্শিক যুদ্ধ’ (ideological war) হিসেবে দেখছেন। এখানে আইসিস, আলকায়েদাসহ পৃথিবীব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর পুঁজিবাদী সভ্যতা, বিজ্ঞানকেন্দ্রিক জীবনবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তারা দেখাতে চাচ্ছেন, এই ক্ষুদ্র ‘ভাইরাস’ হচ্ছে মানুষের এই সভ্যতার প্রতি সর্বশক্তিমান আল্লাহর গজব। তাই এসময়ে সংগঠনগুলো কোরআন, হাদিস থেকে বেশি বেশি উদ্ধৃতি তুলে ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে সামনে তুলে আনছেন। খ্রিস্টানদের সঙ্গে মুসলমানদের ক্রুসেড, ইহুদিদের সঙ্গে ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব সংঘাতের কাহিনি তুলে ধরে ইসলামের বিশুদ্ধতা প্রমাণ করতে চান। এর মাধ্যমে ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান বলে প্রকাশ করেন।

ভাবাদর্শিক যুদ্ধের অংশ হিসেবে অন্যান্য সকল কিছুর তুলনায় মহামারির কালে ইসলামের ব্যাখ্যা কীভাবে বৈজ্ঞানিক ও যৌক্তিক, সে সম্পর্কিত ব্যাখ্যাগুলোকে সকল জঙ্গিসংগঠনগুলো উদ্দেশ্যমূলকভাবে সামনে আনেন। করোনার প্রথম থেকেই এই ‘জীবাণু’ কীভাবে সাধারণভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের বিপরীতে কাজ করে, তা তুলে ধরতে চেষ্টা করেন। বিশেষ করে, চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে এই সংগঠনগুলো ‘উইঘুর’ মুসলিমদের ওপর চীনাদের অত্যাচার হিসেবে সামনে আনার চেষ্টা করেন। এই ধরনের ভাবাদর্শিক যুদ্ধের অংশ হিসেবে সংগঠনগুলো বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর বিষোদগার করেন। এরা শূকর, সাপ, ব্যাঙ, বাদুড় খায় বলে তারা আক্রান্ত। এখানে তাদের প্রচারণার মূল অংশ থাকে ‘খ্রিস্টান, ইহুদি-নাসারা, নাস্তিকদের’ নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা প্রচারণার গল্প তৈরি করা নিয়ে।

পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, নিও-লিবারালিজম, সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে বিভিন্ন উসকানিমূলক গল্প এবং এসব নিয়ে তাদের ব্যঙ্গ করা এবং মিথ্যা গল্পের মাধ্যমে বিশ্বাস করানো যে এরা প্রকৃত অর্থেই পৃথিবীর জন্য অনিষ্টকারী। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রাজনৈতিক ইসলামের আড়ালে এসব গল্পের মধ্যে দিয়ে ওয়াহাবি মতাদর্শ ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের মানুষ এমনকি নিজ ধর্মের অন্য মতাদর্শের মানুষের প্রতি ঘৃণা ছড়িয়ে দেন। যাকে আমরা অপরাধবিজ্ঞানের ভাষায় ঘৃণ্য অপরাধ (hate crime) বলে চিহ্নিত করি।

পাঠকবৃন্দ লক্ষ করবেন, বাংলাদেশেও বিভিন্নভাবে গত ৪-৫ মাস ধরে ওয়াজ, মাহফিল, বয়ানের নামে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের পক্ষে, জামায়াতের পক্ষে, জঙ্গিবাদের পক্ষে কাজ করেন এমন রাজনৈতিক ইসলামের প্রতিনিধি এবং ‘মোল্লারা’ সরব হয়েছেন। এই ঘৃণ্য অপরাধের মাধ্যমেই তারা ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ বিশেষ করে শি জিনপিং, ট্রাম্প থেকে শুরু করে এমনকি ইরানের মুসলিম ও বাংলাদেশের আদিবাসীদের নিয়েও ঘৃণা ছড়িয়ে যাচ্ছেন। যদিও আমি জানি অনেক ইসলামি তাফসিরকার ও ব্যাখ্যাকারক এই ধরনের মতাদর্শের বাইরে থেকে স্বতন্ত্র অবস্থানে থেকে কাজ করতে চেয়েছেন, যা এই মহাসংকটকালে হয়তো মানুষ ইতিবাচক হিসেবেই দেখবেন।

দ্বিতীয়ত, করোনার সময়ে রাজনৈতিক ইসলামের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য থাকে গুজব ছড়িয়ে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইসিস, আলকায়েদা থেকে শুরু করে সকল জঙ্গি সংগঠন তাদের ওয়েবসাইট, লিফলেট, রাজনৈতিক প্রচারণা ও গোপন বক্তব্যে ও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। জঙ্গিবাদ সংগঠনগুলো প্রথম থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকারের তথ্য উপাত্তকে বিভ্রান্তকারী বা মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা করছেন। যেমন, তারা প্রথম থেকেই প্রমাণ করতে চেয়েছেন, চীনের প্রচুর মানুষ মারা গেলেও তা সরকার গোপন করছে। এমনকি এমন প্রচারণাও করেছে, চীনে উইঘুর মুসলিমদের মধ্যে নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে করোনার জীবাণু ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ এই সংগঠনগুলোর মূল উদ্দেশ্যই থাকে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করা। এর অংশ হিসেবে যেখানেই তাদের রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পান, সেখানেই সরকারের বিপক্ষে বিষোদগার করার চেষ্টা করেন। যদিও এটা ঠিক, নব্য-উদারতাবাদের যুগে পুঁজিবাদী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির সংকট মানুষের চোখে অবশ্যই পড়েছে। তার কারণে মানুষ এখন বিকল্প বিশ্বব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করছেন।

কিন্তু রাজনৈতিক ইসলামের আড়ালে এসব সংগঠন সরকারি প্রচেষ্টার বাইরে ত্রাণ সাহায্য, মানবিক সাহায্য, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও মৃত লাশ সৎকার কর্মসূচির মাধ্যমে মন জয় করার চেষ্টা করে। পৃথিবীর সব দেশে সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্র, জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো করোনার সময়কে একটা সুযোগ হিসেবে দেখে। ইতালি, আমেরিকা, ব্রাজিল, স্পেনের গ্যাং-মাফিয়া সংগঠনগুলো যেমন এই করোনা সময়ে নতুন নতুন ফাঁদ পেতে আর্থিক সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, ঠিক তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ দক্ষিণ এশিয়ার জঙ্গি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো মানবিক ত্রাণ সাহায্য বিতরণসহ সকল কাজেই মানবিক উদাহরণ সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে চাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আবেগ দিয়ে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে। সাধারণভাবে যেহেতু এরা বিভিন্ন দেশে সারাবছরই নেতিবাচক সহিংস রাজনীতির কারণে কোণঠাসা অবস্থায় থাকে, সেহেতু তারা এই ধরনের মানবিক কার্যক্রম আড়ালে কাজ করতে চায়। আল মারকাজুলসহ অনেক সংগঠনের এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে থাকা অস্বাভাবিক নয় বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাংলা ট্রিবিউনের এ সংক্রান্ত রিপোর্টটিতেও বিশেষজ্ঞরা একই মন্তব্য করেছেন। আমি মনে করি এদের পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রও অত্যন্ত জোরালোভাবে সক্রিয় থাকে। বাংলা ট্রিবিউনের জঙ্গিবাদ সম্পর্কিত রিপোর্টে একজন যুগ্ম সচিব পর্যায়ের আমলার যুক্ততা ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ত্রুটিপূর্ণ মাস্ক আমদানির কেলেংকারির পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য শুনলেই তা পাঠক অনুভব করতে পারবেন। ফলে এখনই সরকারকে এই বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক ও কৌশলী নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।

তৃতীয়ত, ভাবাদর্শিক যুদ্ধ, ঘৃণ্য বক্তব্য ও গুজব ছড়ানোর পাশাপাশি ধর্মীয় জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদী ও সংঘবদ্ধ অপরাধী সংগঠনগুলো করোনার সময়ে নতুন রিক্রুটমেন্টের পাশাপাশি সরাসরি সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আবার সক্রিয় হতে চায়। যেহেতু এই সময়ে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি কম থাকে, সেহেতু অনেক দেশেই সরাসরি আক্রমণের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আইসিস, তালেবানসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের লিফলেট ও প্রচার প্রচারণার মধ্যে এই ধরনের জঙ্গি হামলার প্রতীকী বক্তব্য আছে। শুধু তাই নয়, করোনার মধ্যেই আফগানিস্তানের কাবুলে শিখ মন্দিরে হামলার মধ্যে ২৫ জনকে হত্যা এই বিষয়টির বাস্তবতাকে আমাদের সামনে তুলে ধরে। আইসিস ও তালেবানরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কারাগারগুলোকে যেসব জঙ্গি আটক আছে, তাদের মুক্ত করার কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে এসেছে। আদর্শিকভাবে এই সংগঠনগুলোর সদস্যরা মনে করে, গ্রেফতারকৃত বা শাস্তিপ্রাপ্ত হয়ে জেলখানায় থাকা দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের মুক্ত করা সংগঠনের সক্রিয় সদস্যদের ঈমানি দায়িত্ব। আইসিস ও তালেবান সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এবং জঙ্গিদের মুক্ত করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলে তাকে ‘শহীদী’ মৃত্যু বলেও চিহ্নিত করেছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের আলোচনায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের মতো দেশেও নিষিদ্ধ ঘোষিত সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলো তালেবান, আইসিসের মতো এই ধরনের কঠোর কর্মসূচি নেবে না, তার গ্যারান্টি আমাদের কে দেবে?

অবিলম্বে তাই এই ধরনের ধর্মীয় জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে জরুরিভিত্তিতে সরকারের সমন্বিত নীতিমালা ও আশু কর্মসূচি প্রণয়ন প্রয়োজন। এ ধরনের কাজে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, উদারনৈতিক রাজনৈতিক দলের সদস্যবৃন্দ ও মিডিয়া হাউসগুলো সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করে নির্দেশনা দিতে পারেন। তাদের সহযোগিতা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনী, কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট, সন্ত্রাসবিরোধী এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, র‌্যাব ও সামগ্রিক পুলিশের প্রত্যেকটি বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য এখন থেকেই কাজ করা উচিত বলেই আমি মনে করি।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সন্তোষ, টাঙ্গাইল।

ইমেইল: [email protected]

/এসএএস/এমএমজে/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
নাগরিক জীবনের সব ক্ষেত্রে পুলিশের অবস্থান রয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
নাগরিক জীবনের সব ক্ষেত্রে পুলিশের অবস্থান রয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি প্রসঙ্গে যা বললেন রাষ্ট্রদূত
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
তামাক কর বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ তরুণের অকালমৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব
তামাক কর বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ তরুণের অকালমৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ