X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

টিনের একচালা ঘরে চলছে পাঠদান, রোদ-বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

নীলফামারী প্রতিনিধি
২৪ মে ২০২৩, ১৩:৩৪আপডেট : ২৪ মে ২০২৩, ১৩:৪০

বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সাত মাস আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরিত্যক্ত ওই ভবনের সঙ্গেই টিন দিয়ে একচালা ঘর তৈরি করা হয়েছে। যেখানে নেই দরজা-জানালা ও বিদ্যুৎ সংযোগ। শিক্ষকদের বসার জায়গাও নেই। এমন পরিবেশে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের কৈপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রখর রোদে ক্লাস করতে গিয়ে অনেকে শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বৃষ্টি আসলে জামা, কাপড় ও বই খাতা ভিজে যায়, ব্যাহত হয় পাঠদান। দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি একেবারে কমে গেছে। নতুন ভবন দ্রুত নির্মাণ করা না হলে শিক্ষা কার্যক্রম থেমে যেতে পারে। 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৩ সালে চার কক্ষের একটি ভবন নির্মিত হয়। সাত মাস আগে উপজেলা প্রকৌশল ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। বিদ্যালয় ভবনের তিনটি কক্ষে ক্লাস না হলেও শিক্ষকরা পরিত্যক্ত ভবনের লাইব্রেরি কক্ষে ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিম আকতার বলে, ‘ভবন না থাকায় আমাদের অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। রোদের কারণে টিনের চালা গরম হয়ে তাপে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। একটু বৃষ্টি হলেই টিনের ফুটা দিয়ে পানি পড়ে বই খাতা সব ভিজে যায়। এ সমস্যার কথা স্যারদের বার বার বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।’

অভিভাবক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বিদ্যালয়টি উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অফিস অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষা ব্যবস্থা সচল রাখতে টিনের একটি একচালা ঘরের বারান্দায় কষ্টের মধ্যে পড়ালেখা করছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার পরিবেশ ও শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বাচ্চারা স্কুলে যেতে চায় না। সরকার যদি দ্রুত নতুন ভবনের ব্যবস্থা না করে তাহলে এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী থাকবে না। অন্য বিদ্যালয়ে চলে যেতে বাদ্য হবে।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরা শারমিন বলেন, ‘ভবন না থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গরমের মধ্যে ক্লাস করতে শিশুদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা পাঠদানের সময় অমনোযোগী হয়। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও দিন দিন কমে যাচ্ছে।’  

প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকে অনেক কষ্ট করে পাঠদান চালিয়ে আসছি। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ভবনটি অনেক পুরনো ও জরাজীর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল। কিন্তু শিশুদের লেখাপড়া যেন ব্যাঘাত না ঘটে সে জন্য টিনের চালা ঘরে আপাতত পাঠদান করা হচ্ছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত ভবনটি নির্মাণ করা হবে।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, ‘বিদ্যালয়টির জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করা খুবই জরুরি। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছি। বরাদ্দ পেলে দ্রুত ভবন নির্মাণ করা হবে।’

/এসএন/
সম্পর্কিত
ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন কত?
ট্রেন ছাড়ছে না সময়মতো, যাত্রীদের ভোগান্তি
শহর থেকে গ্রামে ফেরা মানুষের সংখ্যা দুই বছরে দ্বিগুণ
সর্বশেষ খবর
মনজিল হত্যা: সৎমা-ভাইসহ ৬ জনের যুক্তিতর্ক অব্যাহত
মনজিল হত্যা: সৎমা-ভাইসহ ৬ জনের যুক্তিতর্ক অব্যাহত
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
টস হেরে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
টস হেরে ব্যাট করছে বাংলাদেশ
বজ্রাঘাতে পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় কারিগরি ত্রুটি, দীর্ঘ যানজট
বজ্রাঘাতে পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় কারিগরি ত্রুটি, দীর্ঘ যানজট
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র