গভীর রাতে গেটের তালা ভেঙে কোরবানির গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লার কয়েক জায়গায় ঘটেছে এমন ঘটনা। এ সময় চোরের দল আশপাশের বাসার গেট আটকে দেয়। এ ছাড়া এক জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
শনিবার (১৫ জুন) গভীর রাতে কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া বড় মসজিদ এলাকার ভাটরা হাউজে তালা ভেঙে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। ওই হাউজের হাসান মাহমুদ হায়দারের এক লাখ ২২ হাজারের একটি, ভাড়াটিয়া আনোয়ার হোসেনের একই দামের আরেকটি এবং ডা. আবু হাসেমের ৮৫ হাজার টাকা দামের একটিসহ মোট তিনটি গরু চুরি হয়। এ ঘটনায় রবিবার (১৬ জুন) কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
হাসান মাহমুদ হায়দার বলেন, ‘আমার একটি ও দুই ভাড়াটিয়ার দুটিসহ তিনটি গরু শনিবার গভীর রাতে চুরি হয়ে যায়। বাসার দেয়াল টপকে গেটের তালা ভেঙে গরুগুলো নিয়ে যায় চোরের দল। আমাদের ভাড়াটিয়ারা রাত তিনটা পর্যন্ত জেগে ছিলেন। রাত পৌনে ৪টার দিকে গাড়ির শব্দ শুনে আরেক ভাড়াটিয়া জেগে ওঠেন। তিনি দেখেন পিকআপ ভ্যানে করে তিনটি গরু নিয়ে যাচ্ছে চোরের দল। আমরা পেছনে তাড়া করে দেখি রামমালা হয়ে কোটবাড়ির দিকে নিয়ে গেছে গরুগুলো।’
স্থানীয় কাউন্সিলর একরাম হোসেন বাবু বলেন, ‘ভাটরা হাউজ আমার বাসার পাশে। চুরির সময় চোরের দল আশপাশের বাসার গেট আটকে দিয়েছে। এমন ঘটনা এই এলাকায় এই প্রথম। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।’
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, অপরাধীদের দ্রুত আটক করতে পারবো।’
এদিকে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামেও চুরির খবর পাওয়া গেছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়ন মিয়াবাজারসংলগ্ন শুয়ারখিল গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় মৃত আব্দুল মান্নান মেম্বারের ছেলে মিজানুর রহমান কোরবানির জন্য শুক্রবার (১৪ জুন) এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কেনেন। শনিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে গরুটি চুরি হয়ে যায়। চুরি হওয়ার বিষয়টি সকালে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়।
গরুর মালিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার মা সকালে ঘুম থেকে উঠে গরুটি না দেখে আমাকে জানায়। পরবর্তীতে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে চুরি হওয়ার ব্যাপারটি বুঝতে পারি। চুরি হওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করিনি।’
এর আগে, কুমিল্লা শহরতলির চাঁপাপুর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিডিসিএল) আবাসিক এলাকায় গরু চুরির অভিযোগ ওঠে। শুক্রবারের রাতের ঘটনাটি শনিবার জানাজানি হয়।
জানা গেছে, ঘটনার পর কোয়ার্টারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সেখানের বাসিন্দারা। এদিকে শুক্রবার রাতের দেড়টা থেকে আড়াইটার সিসিটিভি ফুটেজও পাওয়া যায়নি। গরুর মালিক ও বিজিডিসিএলের টেকনিশিয়ান জাহেদ আলী বলছেন, ‘আবার গরু কেনার প্রস্তুতি চলছে।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিজিডিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) নিলুফার বেগম। ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গরুটি হয়তো দড়ি ছিঁড়ে ছুটে গেছে।’ কিন্তু সিসিটিভির ফুটেজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।