খাগড়াছড়িতে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টার দিকে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পানখাইয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুন খাগড়াছড়ির মধ্য শালবাগান এলাকার মৃত নূর নবীর ছেলে। এ ঘটনার জন্য পানখাইয়া পাড়াবাসীকে দায়ী করেছেন মামুনের স্বজনরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে ওই এলাকায় এক পাহাড়ি বাড়িতে মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন মামুন। এ সময় পাড়ার লোকজন পিটুনি দিলে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামুনের মামা মো. নূর হোসেন বলেন, ‘সকালে জানতে পারি মামুন পানখাইয়া পাড়ার স্লুইসগেট এলাকায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। এ ঘটনার জন্য ওই পাড়াবাসী দায়ী।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামুন নিজ এলাকায় ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন। তিনি চুরির অপরাধে এর আগেও বেশ কয়েকবার জেল খেটেছেন। ঘটনাস্থলে তার লাশের পাশে একটি মোটরসাইকেল পড়ে ছিল।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে পুলিশকে জানানো হয় একজনের লাশ এসেছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে পুলিশ। চুরির ঘটনায় মামুনের বিরুদ্ধে মামলা আছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।’
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, অন্ধকারে মোবাইল ও টর্চলাইটের আলোতে দুই-তিন জন ব্যক্তি ওই যুবককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করছেন। প্রাণে বাঁচার জন্য চিৎকার করতে করতে মাফ চাইলেও তারা থামেননি। ফেসবুকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অনেকে।
এদিকে, মামুনকে হত্যার প্রতিবাদে বুধবার বিকালে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে হত্যাকারীদের শনাক্ত, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিষদের নেতা আসাদ উল্ল্যাহ, আবদুল মজিদ ও মাসুম রানা।