চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সাত বছর বয়সী শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন। চিকিৎসা নিচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) হাসপাতালে ছুটে যান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক। এ সময় তিনি আহতদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোট ১০ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়ে শিশু আরাধ্য বিশ্বাসসহ তিন জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে আরাধ্য বিশ্বাস ও তাসলিমা ইসলাম প্রেমা (২০) আছেন চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে এবং আহত অপরজন দুর্জয় (২৫) চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
বুধবারের ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় মারা যান শিশু আরাধ্য বিশ্বাসের বাবা দিলীপ কুমার ও মা সাধনা রানী। তারা ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার রাতেই স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয় লাশ। বৃহস্পতিবার সকালেই সম্পন্ন হয়েছে তাদের শেষকৃত্য। অথচ একমাত্র মেয়ে আরাধ্য জানে না তার সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হবে না বাব-মার। এমনকি মা-বাবা যে বেঁচে নেই তাও জানে না আরাধ্য। তার ভরসা এখন বৃদ্ধ দাদু দুলাল বিশ্বাস।
বন্ধু ও নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে মাইক্রোবাসে বুধবার ভোরে ঢাকা থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান দিলীপ, তার স্ত্রী সাধনা রানী ও সাধনার বড় ভাইসহ ১০ জন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নুরুল আলম আশিক জানান, লোহাগাড়ায় আহত তিন জন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে শিশু আরাধ্য বিশ্বাসসহ দুই জনকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অপরজনের চিকিৎসা চলছে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন জনকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক। এ সময় তিনি আহতদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন এবং উপপরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জনের মধ্যে দোহাজারি হাইওয়ে থানা পুলিশ বুধবার রাতে ৮ জনের এবং পাঁচলাইশ থানা পুলিশ অপর দুই জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।