যশোরের অভয়নগর উপজেলায় যুবলীগ নেতা মুরাদ হোসেন (৩০) হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পার হলেও মামলা হয়নি। মৃত্যুর আগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম বলে যান মুরাদ—এমন দাবি নিহতের বাবা সাহাবুল ইসলামের।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পৌনে ৬টা পর্যন্ত থানায় কোনও এজাহার দায়ের করা হয়নি। হত্যায় জড়িত কাউকে আটকও করতে পারেনি পুলিশ।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টা থেকে পৌনে ১০টার দিকে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের বাড়ির কাছে দুর্বৃত্তরা মুরাদ হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। তাকে উদ্ধার করে খুলনায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুরাদ হোসেন উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের সাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় ধর্ষণ, মাদক, অপহরণ, নাশকতা এবং মারামারির ৯টি মামলা রয়েছে।
নিহত মুরাদ হোসেনের বাবা সাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলে মুরাদ হোসেনের সঙ্গে অতীতে রাজনীতি নিয়ে এলাকার শাহিন ফারাজী এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আব্দুস সালামের গ্যাঞ্জাম-ফ্যাসাদ ছিল। আমার ছেলেকে যারা মেরেছে, মারা যাওয়ার আগে সে তাদের নাম বলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে শাহিন ফারাজী এবং আব্দুস সালাম এলাকার কয়েক জনকে মারধর করে। শাহিন ফারাজী দীর্ঘদিন বাইরে ছিল। আব্দুস সালাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হওয়ার পর শাহিনকে এলাকায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। ওরা মানুষজনকে মারধর এবং চাঁদাবাজি করে। সবার সাথে কথা বলে মামলা করতে দেরি হচ্ছে। তবে আজই মামলা করবো।’
অভয়নগর থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, ‘মুরাদ হোসেনের সঙ্গে এলাকার একটি পক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এই দ্বন্দ্বের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষরা পরিকল্পিতভাবে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মুরাদ হোসেন স্পট ডেড হননি। হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের কাছে অভিযুক্তদের নাম বলে গেছেন। আমরা ইতোমধ্যে তাদের কয়েক জনকে শনাক্ত করেছি। তাদের আটকে অভিযান চলছে।’
তিনি বলেন, ‘নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে মামলা রেকর্ড করা হবে।’